Insaf Yatra

ইনসাফ যাত্রায় মানুষের ঢল হুগলী জেলায়

রাজ্য

অভীক ঘোষ ও শুভ্রজ্যোতি মজুমদার- চুঁচুড়া

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার হুগলীর জেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলল ইনসাফ যাত্রা। সুসজ্জিত মিছিল এদিনেও ছাপ ফেলেছে। এদিনেও মহিলা ঢাকীরা মিছিলে পা মিলিয়েছেন। গঙ্গাপাড়ের রাস্তার দুধারে উৎসুক মানুষ বিশেষ করে মহিলাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সবাই মিছিলের মুহুর্ত মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দী করার জন্য উৎসুক ছিলেন। এদিন চুঁচুড়া ঘড়ির মোড় থেকে ইনসাফ যাত্রা শুরু হয়ে বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে বাঁশবেড়িয়ার ত্রিবেণীতে পৌঁছায়। এখানেই হুগলী জেলার তৃতীয় দিনের পদযাত্রা শেষ হয়। 
জেলায় তিন দিনের পদযাত্রা এগিয়ে যাবার সময় গোটা রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন গণসংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ সংবর্ধনা ও অর্থসাহায্য দেন। বিশিষ্ট পর্বতারোহী পিয়ালি বসাক মীনাক্ষী মুখার্জিকে সংবর্ধনা দেন। 
বন্ধ ডানলপ কারখানার গেটে পদযাত্রীদের সংবর্ধনা দেন কারখানা শ্রমিকরা। এখানে মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, মানুষের বিচারবুদ্ধি বোধ আছে, তাই ডানলপ শুধুমাত্র ডানলপ শ্রমিকদের নয় ডানলপ আমাদেরও, ডানলপ গোটা পশ্চিমবঙ্গের, ডানলপ গোটা ভারতবর্ষের। তাই মানুষ যখন চাইছে ডানলপ মাথা তুলে এগোবে তখন কোন শক্তিই তাকে আটকাতে পারবে না। ডানলপের জন্য পথ হেঁটেছেন ডানলপকে পুণরুজ্জীবিত করার রাস্তায় আবার আসুন। আবার দেখা হবে ৭ জানুয়ারি ব্রিগেডের ময়দানে ডানলপের জন্য, আপনার জন্য, আমার জন্য। 


 

এদিন সকাল সাড়ে দশটায় চুঁচুড়া ঘড়ির মোড় থেকে ইনসাফ যাত্রার পথচলা শুরু হয়। চুঁচুড়া ঘড়ির মোড়, চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল, মল্লিক কাশেম হাট হয়ে হসপিটাল রোড হয়ে ইনসাফ যাত্রা মানুষের প্লাবন তারল্য নিয়ে বয়ে চলে ত্রিবেণী মনসাতলার দিকে। যাত্রাপথ বড়জোর ১২কিলোমিটার। চকবাজারে বিপ্লবী পাঠাগার ভারতের বিপ্লবী আন্দোলনের তিন ধারার ছোঁয়া মেখেই এগিয়ে যায় ইনসাফ যাত্রা। 
মিছিলে চাকরির দুর্নীতির সঙ্গে উঠে এসেছে সিঙ্গুরে কারখানা ডিনোমাইট দিয়ে ভেঙে দেওয়ার তৃণমূলী ষড়যন্ত্রের কথা। মিছিল পাঙ্খাটুলি, চকবাজার, বালির মোড়, ত্রিকোণ পার্ক, সাহাগঞ্জ, ডানলপ কারখানার গেট, খামারপাড়া, বাঁশবেড়িয়া হয়ে ত্রিবেণী পৌঁছায়। বন্ধ ডানলপ কারখানার শ্রমিকরা ইনসাফ যাত্রাকে অভ্যর্থনা জানান। ডানলপ বন্ধ বহু বছর, সেই বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা জানালেন তাদের সমস্যার কথা। শ্রমিক শান্তনু ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘ভিআর নিয়ে ১০ বছর। এখন ডানলপ বেচে দিতে চাইছে মালিকপক্ষ। ডানলপ নিয়ে তৃণমূলের কোন আন্দোলন নেই। বামপন্থী দলগুলিই একমাত্র লড়াই করছে মিল কারখানা খোলার জন্য। সব কারখানার অবস্থাই এক খোলার কথা হলেও ধুঁকছে এলএমআই, গ্যাঞ্জেস জুট, কেশোরাম রেয়ন, ত্রবেণী টিস্যু, বিটিপিএস’’।

 


হুগলী জেলার রিষড়া থেকে চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর বাঁশবেড়িয়ার কলবাজারে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করে মেরুকরণের বাতাবরণ তৈরি করেছে তৃণমূল বিজেপি। এই পরিবেশের বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানিয়েছে ইনসাফ যাত্রা। 
হুগলীর বালির মোড়ে সংবর্ধনা দেওয়ার পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রাক্তন হুগলী জেলার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মলয় শূর। এছাড়া  বিভিন্ন জায়গায় সিপিআই(এম), সিআইটিইউ,  ১২ই জুলাই কমিটি, টোটো ও অটো ইউনিয়ন সহ অন্যান্য সংগঠনগুলি সংবর্ধনা দেয়। পদযাত্রায় ছিলেন হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্য, মীনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, সংগঠনের প্রাক্তনী অলকেশ দাস, দেবব্রত ঘোষ, মনোদীপ ঘোষ, আব্দুল হাই, তীর্থঙ্কর রায় সহ অন্যান্যরা। 
এদিন দুপুরে ত্রিবেনি মনসাতলা থেকে পদ যাত্রা পূর্ব বর্ধমানের পথে যাওয়ার সময় বলাগড়ের শেরপুরে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে সম্বর্ধনা গ্রহণ করে। হুগলী জেলা ছেড়ে যাওয়ার দিনেও মানুষের কথা মানুষের সমস্যা মানুষের আবেগ অনেক কিছুর সাক্ষর বহন করে চললো ইনসাফ যাত্রা। 

Comments :0

Login to leave a comment