MUNICIPALITY RECRUITMENT SCAM

পৌর নিয়োগের নথি মিলল কতটা, জমার মেয়াদ শেষে রইল প্রশ্ন

রাজ্য জেলা

recruitment scam ed west bengal bengali news

২০১৪ সালের পরে হওয়া সমস্ত পৌর নিয়োগের নথি তলব করল রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। শুক্রবার রাজ্যের সমস্ত পৌরসভাগুলিকে এই সংক্রান্ত নোটিশ পাঠিয়েছে পৌর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন ডাইরেক্টর অফ লোকাল বডিজ বা ডিএলবি। ২৯ মে’র মধ্যে এই সংক্রান্ত তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এত দ্রুত সমস্ত নথি পাঠানো হয়েছে কিনা, সেই বিষয়ে যদিও সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। 

এই নির্দেশিকা পৌরসভাগুলিতে পৌঁছনোর পরেই প্রমাদ গুণতে শুরু করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কেন? ওয়াকিবহাল মহল জানাচ্ছে, ২৩ মে ইডি রাজ্যের থেকে এই সংক্রান্ত তথ্য চায়। তারপরেই ডিএলবি প্রত্যেক পৌরসভায় এই নোটিশ পাঠিয়েছে। 

ইডি’র চিঠি মারফৎ জানায়, যত দ্রুত সম্ভব এই তথ্যগুলি তাঁদের প্রয়োজন। সেই মতো পৌর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর পৌরসভাগুলিকে ২৯ মে’র মধ্যে তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দেয়। 

চিঠির ভিত্তিতে ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারির পর থেকে পৌরসভাগুলিতে  কত নিয়োগ হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সেখানে পুরসভার নামনিয়োগ হয়ে থাকলে সে সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির নোটিফিকেশন নম্বর ও তারিখকতজনকে নিয়োগ করা হয়েছিলনিয়োগ হয়ে থাকলে কোন পদে কতজন এবং তাদের নাম ঠিকানা সহ কোন এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ হয়েছিল তার নাম এবং পরীক্ষার ওএমআর শিটের কপি সোমবারের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছিল। 

শুধু তাই নয়২০১২ এবং ২০১৭ সালের পৌরসভার পৌরপ্রধানদের এবং পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসারদের নাম ঠিকানাও চেয়ে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ওইসব তথ্যের হার্ড কপি মঙ্গলবার ডিএলবি অফিসে জমা দেওয়ার নির্দেশ ছিল শুক্রবারের চিঠিতে। 

 প্রসঙ্গত,  শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হয় অয়ন শীল । তাঁর সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে পুর নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু তথ্য উদ্ধার হয়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকদের ধারণা, পৌরসভা গুলিতেও নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়ে থাকতে পারে । 

তালিকায় প্রায় ৬০ টি পৌরসভার নাম উঠে আসে। যে তালিকায় দক্ষিণ দমদমউত্তর দমদম, দমদমবরাহনগর, কামারহাটিপানিহাটি, টিটাগড় সহ  রাজ্যের একাধিক  পৌরসভার নাম উঠে এসেছে । সূত্রের খবর,  অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজন প্রাইভেট লিমিটেডের হাত ধরে ওই সময়কালে বরাহনগর পুরসভায় প্রায় ১৭০ জনের উপর  নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি হয়েছিল। 

একইভাবে কামারহাটি পৌরসভায় তিন দফায় ৩০৩ জনটিটাগড় পৌরসভায় ২২১ জন,হালিশহর পৌরসভায় প্রায় ৩৯ জন নিয়োগ হয়েছিল। পানিহাটি পৌরসভায় আবার অয়নের সংস্থা নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করলেও মাঝপথে তা থমকে যায়। 

অন্যদিকে খড়দহ পৌরসভাতে আবার প্রায় ১৯ জনকে দফায় দফায় নিয়োগ করা  হয়েছে। সমস্ত বিষয়টিকে আতস কাঁচের তলায় রেখেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সে কারণেই ইডি'র রেফারেন্সের ভিত্তিতেই ডিএলবি তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে বলে ধারণা অভিজ্ঞ মহলের। 

বরানগর বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্য বলেন‘‘বরাহনগর পুরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রে যে দুর্নীতি হয়েছিল তা আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি। আমরা চাই সঠিক তদন্ত হোক। দোষীরা শাস্তি পাক’’। 

কামারহাটির পৌরপ্রধান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘ডিএলবি থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে মেইল এসেছিল। আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি।  নিয়ম মেনেই পুরসভায় সমস্ত নিয়োগ হয়েছে। সমস্ত তদন্তের মুখোমুখি হতে রাজি। আর তাছাড়া দপ্তর যা চাইবে তা তো দিতেই হবে। সেইমতো আমরা সমস্ত তথ্য পাঠিয়ে দিয়েছি’’।

Comments :0

Login to leave a comment