শুভঙ্কর দাস
এএফসি এশিয়ান কাপে হতাশাজনক পারফরম্যান্স ভারতীয় ফুটবল দলের। এই প্রসঙ্গেই এবার মুখ খুললেন ফুটবল কর্তা থেকে কোচ, সবাই।
আবারও সেই খারাপ ফলাফল অব্যাহত। এএফসি এশিয়ান কাপ থেকে বিদায় নিল ভারত। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২-০ গোলে পরাজয়। দ্বিতীয় ম্যাচে উজবেকিস্তানের কাছে ৩-০ গোলে হার এবং শেষ ম্যাচে সিরিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরে বিদায় ব্লু-টাইগার্সদের।
এই প্রসঙ্গে ইউনাইটেড স্পোর্টসের ক্লাবকর্তা নবাব ভট্টাচার্য গণশক্তি ডিজিটালকে জানালেন, “ভারতীয় ফুটবল বেঁচে আছে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডানের ওপর। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ডার্বির গুরুত্ব সবসময়ই থাকবে। কিন্তু ভারতীয় দল যদি না জেতে, তাহলে কি লাভ? ডার্বিতে আগে ঘরের ছেলেরা গোল করে যেত। এখন তো সব বিদেশীরা গোল করে। ভারতীয় ফুটবলার যদি উঠে না আসে, তাহলে তো সমস্যা।”
তিনি আরও যোগ করেছেন, “এত মানুষ মাঠে আসছে ইন্ডিয়া টিমকে সাপোর্ট করতে, তারপর এই রেজাল্ট। কোচের কাছেই বা পরিবর্ত কোথায়? সুনীল ছেত্রী এতকিছু দিয়েছে দেশকে, কিন্তু তারপর কে? কারণ যাঁরা ক্লাবগুলো চালাচ্ছে, তাঁদের ইউথ ডেভেলপমেন্টের প্রতি কোনও আগ্রহই নেই। সবাই ওপরটা নিয়ে ব্যস্ত। এই কালচারটা বদলাতে হবে। আমাদের ছোটবেলায় দেখেছি, তখন সমানে সমানে লড়াই হত বিদেশী দলগুলোর সঙ্গে। এখন আমাদের দেশের প্রথম সারির ফুটবলারদের পেমেন্টও যথেষ্ট ভালো। কিন্তু সেই কোয়ালিটির প্লেয়ার উঠে আসছে না।”
ফুটবল কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য গণশক্তি ডিজিটালকে বললেন, “খারাপ লাগছে। স্ট্রেংথ, স্ট্যামিনা এবং স্পিড, এই তিন জায়গাতেই আমরা পিছিয়ে রয়েছি। সেইসঙ্গে উচ্চতা, এইজন্যই আমরা পেরে উঠছি না। ইগোর স্টিমাচ চেষ্টা করছে, কিন্তু ওর কাছে আর অন্য কোনও উপায়ও নেই। শেষ ম্যাচে একটু ওপেন হতে গেছিলাম আমরা, তাতেই বিপত্তি। থাপা এবং সুরেশ ছিটকে পড়ে যাচ্ছিল। সন্দেশ ঝিঙ্গান একটু লড়েছে তাও। এখন থেকেই এই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে।”
তাঁর মতে, “গোটা ভারত থেকে স্কাউট করে অ্যাকাডেমিতে রেখে ছেলেদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে, আমাদের ভাবতে হবে কোথায় পিছিয়ে রয়েছি। সামনের দিকে এগোতে গেলে কি করতে হবে, ভাবা উচিৎ। নর্থইষ্টের ছেলেরা আইএসএলে হয়ত ভালো খেলছে। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচে পারছে না। জানিনা, এইরকমভাবে কেউ ভাবছে না কেন। ইগোরের জায়গায় অন্য কেউ এলেও, তাঁকেও একই সমস্যায় পড়তে হবে। স্টিমাচ তাও চেষ্টা করছে, প্ল্যান করে এগিয়েছে বলে অনেকটা হয়েছে। গুরপ্রীত এবং ঝিঙ্গানের উচ্চতা বেশি, তাই লড়াই করতে পারছে। উজবেকিস্তানের স্পিড আর আমাদের স্পিড? এইভাবে চলবে না।”
সবমিলিয়ে ভারতের এই খারাপ ফলাফলের পর ফুটবল মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।
Comments :0