সন্দেশখালির মতো রাজ্যের বিভিন্ন অংশে অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল তৈরি হয়েছে তৃণমূল সরকারের মেয়াদে। পরিকল্পিত কায়দায় অপরাধীদের জড়ো করা হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ একজোটে লড়ছেন। অপরাধীদের ধর্ম খুঁজে লড়াইকে ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে আরএসএস’র পরিকল্পনায়। অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল তৈরির কাজে যুক্ত থেকেছেন শুভেন্দু অধিকারীর মতো তৃণমূল থেকে বিজেপি’তে যাওয়া নেতারাও।
শুক্রবার সন্দেশখালিতে ইডি এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর মারাত্মক হামলার প্রতিবাদে এই মর্মে সরব হলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘এই অন্যায়ের রাজত্বের অবসানের জন্যই ৭ জানুয়ারি ব্রিগেডে যৌবনের ডাকে জনতার ঢল নামবে। দুর্নীতিগ্রস্ত, অপরাধী, নিপীড়কদের বিরুদ্ধে একজোটে লড়াই চলবে।’’
সেলিম মনে করিয়েছেন সিপিআই(এম) নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মন্তব্যকেও। সেলিম বলেন, ‘‘২০১১’র নির্বাচনের পর রাজ্যে অপরাধীদের বুকের পাটা বেড়েছে। তারা মনে করছে এই সরকার তাদের। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তখন বলেছিলেন। ১২ বছর ধরে আমরা বামপন্থীরা বলছি। সন্দেশখালির মতো রাজ্যের বিভিন্ন এলাকাকে মুক্তাঞ্চল করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে।’’
এদিনই মু্র্শিদাবাদে তৃণমূল থেকে এখন বিজেপি’র নেতা শুভেন্দু অধিকারী সন্দেশখালি প্রসঙ্গেই ভাষণ দিয়েছেন। শুভেন্দু হামলাবাজদের রোহিঙ্গা বলেছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, সন্দেশখালিতে তৃণমূলের যে নেতার বাড়িতে তল্লাশির জন্য ইডি গিয়েছিল, সেই ‘শাজাহান শেখ আগে সিপিআই(এম) করত।’
দুই মন্তব্যেরই কড়া প্রতিবাদ করেছেন সেলিম। সাজাহান এখন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের অন্যতম কর্মাধ্যক্ষ।
সেলিম কড়া প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ করছি, ২০১১’র আগে শাজাহানের শেখের নাম কবে কোন ঘটনায় এসেছে দেখা হোক। ২০১৮’র পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই শুভেন্দুই এমন বাহিনী তৈরি করেছিলেন। মুর্শিদাবাদের করেছিলেন। বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত হলে ৫ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। বামপন্থীরা ভালো ফল করেছিল তাদের ঘরছাড়া কতে এই বাহিনী তৈরি হয়েছিল। এই বাহিনী আজ তৃণমূল কাল বিজেপি। ভেড়ি, প্রাকৃতিক সম্পদ, পাচার চালিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটের জন্য এই বাহিনী তৈরি করেছিলেন। তখন শুভেন্দু তৃণমূলের মন্ত্রী। আজ শুভেন্দু বড় বড় কথা বলছেন!’’
সেলিমের ক্ষোভ, শুভেন্দু বা মুকুল রায়ের নেতৃত্বে একসময়ে অপরাধীদের মদত দিয়েছে তৃণমূল। আজ হচ্ছে অভিষেক ব্যানার্জিদের নেতৃত্বে।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা কাকে বলে বিজেপি জানে? রোহিঙ্গাদের দায়ী করছে, মানে তৃণমূলকে আড়াল করছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘শুভেন্দু, মুকুল, অভিষেকরা আরএসএস নির্দেশিত পথে মস্তানবাহিনীতে মুসলিম যুবকদের যুক্ত করেছে। আজ দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ লড়ছেন। লড়াইকে দুর্বল করতে মুসলিমদের দায়ী করছে বিজেপি, যাতে তৃণমূল রেহাই পেয়ে যায়।’’
ইডি’র তদন্ত প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘যথেষ্ট প্রস্তুতি না নিয়ে ইডি গেল কেন? জানা যাচ্ছে ইডি পুলিশকে বলেছিল, পুলিশ শাজাহানকে বলেছে, সে পালিয়ে গিয়েছে। আজকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এখনও অভিষেকের নাম বাদ যায়নি। কয়লায় বাদ গিয়েছিল আরএসএস আর প্রধানমন্ত্রীকে ধরে। ফলে এটা হামলার রিহার্সাল হলো। এখন দেখার কেন্দ্রের সরকার কী ব্যবস্থা নেয়। কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কবে মুখ খোলেন।’’
রাজ্যপালের বিবৃতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে সেলিম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের আগেও রাজ্যপালকে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছিল। খুব প্রচার হয়েছিল। পঞ্চায়েতের পর উনি কী করেছেন আমরা দেখেছি।’’
SALIM SANDESHKHALI
অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল রাজ্যজুড়ে, শামিল শুভেন্দুরাও: নিন্দায় সেলিম
×
Comments :0