রাজ্যের মুখ্য-নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে দুবার রাজভবনে তলব করেছিলেন রাজ্যপাল। সিভি আনন্দ বোসের সেই তলব দুবারই এড়িয়ে গিয়েছেন রাজীব সিনহা। তার যুক্তি, তিনি নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে ব্যাস্ত। কিসের ব্যাস্ততা? শনিবার নির্বাচন কিন্তু এখনও পর্যন্ত মনোনয়নের সব তথ্য, প্রার্থীদের সব তথ্য সাইটে আপলোড করতে পারেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু এবার আর তলব নয়। মুখবন্ধ খাম গেলো রাজীব সিনহার কাছে। রাজভবন সূত্রে এমনটাই খবর। তবে সেই খামের ভিতর কি আছে সেই বিষয় মুখ খোলেনি রাজভবন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে রাজভবনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনারকে তলব করেছিলেন নির্বাচন সংক্রান্ত কিছু বিষয় আলোচনার জন্য। তিনি আসেননি। তিনি জানিয়েছিলেন নির্বাচনের বিভিন্ন কাজ নিয়ে তিনি ব্যাস্ত আছেন। এর পরপরই রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনারকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসার ঘটনা ঘটছে। প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। বিরোধীরা যেমন আক্রান্ত তেমন ভাবে তৃণমূলের হাতে খুন হচ্ছেন আর এক তৃণমূল কর্মী। যেমন বাসন্তী।
আর এই হিংসা নিয়ে রাজভবন নির্বাচন কমিশনকে ৪৮ ঘন্টার সময় বেঁধে দিবেছিল। সোমবার সিভি আনন্দ বোস বলেজন যে, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এই হিংসা বন্ধ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
কিন্তু ৪৮ ঘন্টা শেষ হওয়ার আগেই রাজভবন থেকে চিঠি গেলো নির্বাচন কমিশনারের কাছে।
উল্লেখ্য ইতিমধ্যে রাজ্যপাল মনোনয়ন পর্বে উত্তপ্ত হওয়া ক্যানিং, ভাঙড়, কোচবিহারে গিয়েছেন। কথা বলেছেন মানুষের সাথে। এমন কি বাসন্তীতে খুন হওয়া তৃণমূল নেতার পরিবারের সাথেও দেখা করে এসেছেন। কিন্তু যেখানে গেলেন না বা যেই এলাকার কথা তার মুখে একবারও শোনা গেলো না তা হলো চোপড়া।
মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে চোপড়ায় খুন হন সিপিআই(এম) কর্মী মনসুর আলম। সেই মনসুরের পরিবারের সাথে কথা বলা দুর। চোপড়ার ঘটনার কথা একবারের জন্য শোনা যায়নি রাজ্যপালের মুখে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে অশান্তিকে কেন্দ্র করে যেই কন্ট্রোল রুম রাজভবনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে তার নাম দেওয়া হয়ে পিস রুম। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সাংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন যে, রাজ্যের মানুষের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা থেকে তিনি এই কন্ট্রোল রুম রাজভবনে খুলেছেন। অন্য দিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ অসাংবিধানিক।
সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই পিস রুম সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘‘রাজভবনে এর আগে কখনও এই ধরনের পিস রুম হয়েছে? আমাদের রাজ্যে তৃণমূল গনতন্ত্রকে হত্যা করছে। কেউ মারা গেলে দেহ সংরক্ষণের জন্য যেমন পিস হাভেন বা পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা হয় সেই ভাবে এখানে বিজেপি রাজভবনে পিস রুমে বাংলার গণতন্ত্রের শব রাখতে চাইছে। আর আমরা চাইছে গণতন্ত্র ফেরাতে। মানুষের পঞ্চায়েত তৈরি করতে।’’
Comments :0