SFI

ছাত্র সংগঠন গুলি কথা শুনে তবে সিসিটিভি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে হাই কোর্ট

রাজ্য কলকাতা

এসএফআই প্রথম থেকেই জানিয়েছিল সিসিটিভিতে তাদের কোন আপত্তি নেই তবে যাদবপুরে সিসিটিভি সহ নিরাপত্তাজনিত সমস্ত ইস্যুতে ছাত্রদের অভিমত জানতে হবে কর্তৃপক্ষকে। সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যু সংক্রান্ত একটি মামলায় এই একই কথা শোনা গেলো কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির গলায়।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন টিএমসিপি নেতা সুদীপ রাহা। তার আইনজীবী ছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি। এদিন সেই মামলার শুনানি ছিল আদালতে। প্রধান বিচারপতি  শিবঞ্জানমের বেঞ্চে। মামলাকারিদের পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সিসিটিভি লাগানোর জন্য। প্রধান বিচারপতি শুনানিতে বলেছেন, তিনি ছাত্র ইউনিয়নগুলির কথা না শুনে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছবেন না। 


হ্যাঁ, কলকাতা হাইকোর্ট যাদবপুরে সিসিটিভি সহ নিরাপত্তাজনিত সমস্ত ইস্যুতে ছাত্রদের অভিমত জানতে চেয়েছেন। যেটা প্রথম দিন থেকে এসএফআই দাবি করে আসছিল।
গত ৯ আগস্ট যাদবপুরের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর পর যাদবপুরে সিসিটিভি বসাতে হবে এই দাবি তুলতে থাকে তৃণমূল এবং বিজেপি। তারা অভিযোগ তোলে এসএফআই সিসিটিভির বিরোধীতা করার কারণে ক্যাম্পাসে সিসিটিভি নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্র সংসদ যা এসএফআইয়ের দখলে সেখানে একাধিক বিভাগের সিসিটিভি রয়েছে।
সুদীপ রাহা যেই মামলা করেছিল তার মামলার বিষয়বস্তু হলো, যাদবপুরে সিসিটিভি বসাতে হবে, বহিরাগত আটকাতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু যেই ১৬ আগস্ট সুদীপ এই মামলা করলো সেদিনই তার সংগঠনের রাজন্যা হালদার একগুচ্ছ বাইরের লোক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে ছাত্রদের চলতে থাকা জিবির ওপর হামলা চালায়। আহত হন এসএফআই নেত্রী আফরিন বেগম।


এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা নির্দিষ্ট করে বলেছিলাম, যাদবপুরে প্রচুর সিসিটিভি আছে, সেগুলোতে এসএফআই কোনোদিন হাত দেয়নি। এসএফআই সিসিটিভির বিরুদ্ধে নয়। তবে, নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সবসময়ই ছাত্রদের সহ সমস্ত অংশের সাথে কথা বলে পদক্ষেপ গ্রহণ করার পক্ষপাতী এসএফআই। বহিরাগত প্রশ্নে তো আমি একধাপ এগিয়ে এও বলেছিলাম যে আমি ওই টিএমসিপি নেতার সাথে সম্পূর্ণ একমত, শুধু ওদের এই বহিরাগত তাড়ানোর কথা যাদবপুরের মতই জোরে জোরে কলকাতা, কল্যাণী, বর্ধমান, উত্তরবঙ্গ সহ রাজ্যের সমস্ত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বলতে হবে। কোনো অসুবিধা নেই। ৬ বছর ছাত্রভোট না হওয়ার দরুন যে পাস আউট টিএমসিপি নেতারা এখনো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ইউনিয়ন রুম, হোস্টেল, পরিচালন ব্যবস্থা সমস্তটা দখল করে বসে আছে, সেই বহিরাগতদের তাড়াতে উদ্যোগ নেবে কি তৃণমূল?’’
হাই কোর্টের শুনানি প্রসঙ্গে সৃজন বলেন, ‘‘আমরা এসএফআই এতদিন ধরে যে কথা বলছিলাম, ছাত্র সহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করেই সকল সিদ্ধান্ত নেওয়া শ্রেয় - আজ মহামান্য আদালত আমাদের দাবিকেই মান্যতা দিলেন।’’


তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই মামলাকারী ছাত্রনেতা কি জেনেবুঝে সজ্ঞানে এই মামলায় রাজ্য সরকার ও উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে অংশীদার করেছেন? আমরা যে কারণে এই ঘটনার নৈতিক দায় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছিলাম, এই মামলায় কি সেই দাবিই জোরালো হলো না? আরো মজা আছে। যে তৃণমূল সাংসদ এই মামলায় সওয়াল করছেন, দুদিন পর পার্লামেন্টে গিয়ে সাজানো বিজেপি বিরোধিতা করার সময়ে তাঁর কি মনে থাকবে, যে এই মামলায় তাঁর মক্কেল যাদবপুরকে বামমুক্ত করার তীব্র তাগিদে নিরাপত্তার প্রশ্নে সমর্থন করে ফেলেছেন বিজেপি সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০'র প্রস্তাবগুলিকে?’’

Comments :0

Login to leave a comment