Hoogly Jaydev and Souvik

সুড়ঙ্গের কাজেই ফিরতে চাই বাড়ি ফিরে জানালেন জয়দেব ও সৌভিক

রাজ্য

ছবি- ছেলেকে কাছে পেয়ে আনন্দিত জয়দেবের বাবা মা।

অভীক ঘোষ - পুড়শুড়া 

উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা টানেলে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকার পর যুদ্ধ জয় করে বাড়ি ফিরল জয়দেব ও সৌভিক। উদ্ধার হওয়ার ছয় দিন বাদে রবিবার তারকেশ্বর লাইনের তোকিপুর স্টেশনে নামার পর গ্রামের মানুষ স্টেশনেই মালা পরিয়ে বরণ করে, উচ্ছাসে ভাসে পুরশুড়া। কাজ তো করতেই হবে, সুরঙ্গ কাটার কাজে আবারও যাবে তারা জানিয়ে দিল।
উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা টানেলে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিক অবশেষে উদ্ধার হয় গত মঙ্গলবার। র‌্যাট হোল মাইনিং পদ্ধতিতে গর্ত খুঁড়ে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছায় উদ্ধারকারীরা। ছেলে টানেল থেকে বেরিয়ে আসতেই নিঃশ্বাস ফেলে হুগলির পুড়শুড়ার জয়দেব প্রারামানিক ও সৌভিক পাকিরার পরিবার। কোম্পানির কেটে দেওয়া টিকিটে রবিবার সকালে হাওড়া হয়ে তোকিপুর স্টেশনে নামে তাঁরা। আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন গ্রামবাসীরা। মালা পরিয়ে বরণ করেন গ্রামের বাসিন্দারা। এরপর জয়ধ্বনী দিতে দিতে তাদের নিয়ে যায় গ্রামে। পুর গ্রাম মেতে ওঠে উৎসবের মেজাজে, শঙ্খ ধ্বনি বাজতে শুরু করে।


 

ছেলে এতো বড় বিপদ কাটিয়ে বাড়ি ফিরছে তাই সৌভিকের জন্য তার প্রিয় খাবার রান্না করে মা। মাছ ডাল তরকারি এগুলোই সৌভিকের পছন্দের বলেন মা লক্ষ্মী দেবী।
তাদের হার হিম করা অভিজ্ঞতার কথায় জয়দেব বলেন, কাজ করতে করতে হঠাৎই ধস নেমে যায়। চারিদিক অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। প্রথমে একটু ভয় করলেও তারপর ভয় অনেকটাই কেটে গিয়েছিল। সকলেই সেখানে ভালোই ছিল খাওয়া-দাওয়ার কোন অভাব হয়নি। কখনো চোর পুলিশ কখনো আবার তাস খেলে সময় কেটেছে। কিছুদিন পর আবার কাজে যোগ দেবো।
সৌভিক বলেন, আমরা ভেতরে কাজ করছিলাম, পরে খবর পাই ধস নেমেছে। প্রথমে ভয় করছিল আস্তে আস্তে সাহস বাড়তে থাকে। বাড়ির কথা মনে পড়ছিল যদিও কোম্পানির লোক আমাদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রেখেছিল। বাড়ির লোকের সঙ্গেও কথা বলিয়েছে। এখন বাড়ি ফিরলাম সবার সঙ্গে দেখা হবে ভালো লাগছে। যে সংস্থায় কাজ করি সেখানে আবার কাজে যোগ দেব। কাজ তো করতেই হবে।
ছেলেকে কাছে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা সৌভিকের মা লক্ষ্মী পাকিরা। তিনি বলেন, ছেলে জয়ী হয়ে বাড়ি ফিরেছে তাই আনন্দ লাগছে। গ্রামের গর্ব সবার গর্ব আশীর্বাদ করি ছেলে দীর্ঘজীবী হোক। জীবনের সবকিছুতেই যেনো জয়ী হতে পারে। ১৭ দিন টানেলের ভিতরে আটকে ছিল সেই ছেলেকে আমি এভাবে ফিরে পাব ভাবতেও পারিনি। ছেলে আমার কাছে যেমন গর্বের তেমনি গ্রামের কাছেও গর্বের। তবে ছেলেকে আবার কাজে পাঠাতে কিছুটা ইতস্তত বোধ হচ্ছে, মায়ের মন তাই মানতে চাইছে না। আবার যদি ঘটে এমন ঘটনা। কাজের জন্য বাইরে যেতে হবে, কিছু করার নেই।

Comments :0

Login to leave a comment