শুভাশিস দেব সরকার- হাওড়া
সোমবার ইনসাফ যাত্রার ৩৯ তম দিন। এদিন শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে শহীদের মায়ের চোখের জল মুছিয়ে ইনসাফ আদায় করা হবেই বলে শহীদ ছাত্র নেতা কমরেড স্বপন কোলের মা রেবা কোলে ও বাবা শ্রীকান্ত কোলেকে আশ্বস্ত করলেন মীনাক্ষী মুখার্জী সহ শহীদ কমরেড আনিস খানের বাবা সালেম খান। সঙ্গে ছিলেন আনিস খানের বাবা সালেম খান। সালেম খান স্বপন কোলের পরিবারের সদস্যদের বলেন ইনসাফের জন্য হাঁটছি। ইনসাফ আদায় করতেই হবে। আনিস খান ও স্বপন কোলের খুনিদের যতক্ষণ না পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে ততক্ষণ ইনসাফ চেয়ে লড়াই আন্দোলন চলবে। কমরেড স্বপন কোলের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করে শহীদ কমরেড স্বপন কোলের শহীদ বেদিতে মাল্যদান করে সোমবার বিকালে আন্দুলের আড়গোড়ী থেকে ইনসাফ যাত্রা শুরু হয়। শহীদ ছাত্র নেতা আনিস খানের বাড়িতে যান ছাত্র যুব নেতৃত্ব।
ইনসাফ যাত্রা এদিন সাঁকরাইল মানিকপুর যায়। ওই অঞ্চলের ডেল্টা জুট মিল দীর্ঘদিন বন্ধ। ২০১১ সালের আগে কারখানায় শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার। বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রত্যক্ষ মদতে কারখানার শ্রমিক সংখ্যা কমিয়ে এনেছে মিল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে মিলের শ্রমিক সংখ্যা পাঁচ শো। ইনসাফ যাত্রা থেকে দাবি উঠলো অবিলম্বে ডেল্টা জুট মিল খুলতে হবে।
এরপর ইনসাফ যাত্রা ডোমজুড়ের গড় বাগান থেকে যাত্রা শুরু করে শেষ হয় শলপ মোড়ে। যাত্রা পথে অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে পদযাত্রীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়ে ইনসাফ যাত্রীদের সম্বর্ধনা দেন ভারত রোলের শ্রমিকেরা। কারখানার সামনে পদ যাত্রীরা এসে পৌঁছালে নীল জামা ও নীল প্যান্ট পরে রাস্তার ধারে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে পদ যাত্রীদের সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করেন। এদিন দীর্ঘ কুড়ি কিলোমিটার পথ করে অতিক্রম করে ইনসাফ যাত্রা। রাস্তার ধারে বহু সাধারণ মানুষ নিজেদের কাজ ছেড়ে রাস্তায় এসে পদ যাত্রীদের সম্বর্ধনায় অংশ নেন। পদযাত্রা ডোমজুড়ের নেহেরু স্কুলের সামনে এলে বহু স্কুল ছাত্রীদের দেখা গেল পদ যাত্রীদের সমর্থনে রাস্তায় এসে দাড়িয়ে পদ যাত্রীদের উৎসাহিত করতে। বহু মানুষ নিজেদের বাড়ি থেকে কেউবা অফিস থেকে পদ যাত্রীদের হাত নেড়ে পাশে থাকার বার্তা দেন। যাত্রা পথের মধ্যে বহু জায়গায় সাধারণ মানুষ সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে পদ যাত্রীদের উৎসাহিত করেন। ইনসাফ যাত্রার সমাপ্তি লগ্নে ব্রিগেড সমাবেশ সফল করতে ছাত্র রাকিব সেখ ও রাহুল দাস নিজেদের পাওয়া টাকা থেকে বাঁচিয়ে মীনাক্ষী মুখার্জীর হাতে অর্থ তুলে দেয়। এছাড়াও বহু সাধারণ মানুষ নিজেদের সাধ্যমতো অর্থ নেতৃবৃন্দের হাতে তুলে দেন। সবার পেটে ভাত, সবার হাতে কাজ সহ বিভিন্ন দাবিতে ইনসাফ যাত্রায় বহু যুবক যুবতীর অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। পদ যাত্রীদের যাত্রা পথ যত এগিয়েছে পদযাত্রায় অংশগ্রহণ কারীদের সংখ্যা ততই বেড়েছে। এদিন সন্ধ্যায় বেলেরোফোন মোড়ে অনুষ্ঠিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন মীনাক্ষী মুখার্জী, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, হিমাংশু রাজ ভট্টাচার্য, প্রতি কুর রহমান, সরোজ দাস সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। সভায় সভাপতিত্ব করেন সুভাষ দে। এদিন মানিকপুর থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রায় ছিলেন মীনাক্ষী মুখার্জী, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, হিমাঙ্গরআজ ভট্টাচার্য, প্রতিকুর রহমান, গণ আন্দোলনের নেতা শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, দিলীপ ঘোষ, পরেশ পাল।
Insaf Yatra
শহীদের মায়ের চোখের জল মুছিয়ে দিল ইনসাফ যাত্র
×
Comments :0