৭ অক্টোবর থেকে চলা ইজরায়েল প্যালেস্তাইন সংঘর্ষ থামার ইঙ্গিত মিলেছে। আল জাজিরা জানাচ্ছে, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একটি শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন কাতার, মিশর, আমেরিকা এবং ইজরায়েলের প্রতিনিধিরা। বৈঠক থেকে শান্তি প্রস্তাব এবং দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উঠে এসেছে। হামাসের শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছেন, তাঁরা শান্তি প্রস্তাব পেয়েছেন। সংগঠনের অভ্যন্তরে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পক্ষে হামাসের মনোভাব সদর্থক হলেও ইজরায়েল জানিয়েছে, তাঁদের পছন্দমত চুক্তি না হলে আগ্রাসন বজায় থাকবে। একইসঙ্গে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘‘এমন কোনও চুক্তি আমরা মানব না, যেখানে হাজার হাজার প্যালেস্তিনীয়কে মুক্তি দিতে হবে।’’
মঙ্গলবার রয়টার্সকে একটি বিবৃতি দিয়েছেন হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়ে। তিনি বলেছেন, ‘‘দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ফেরাতে পারে এবং আগ্রাসন বন্ধ করতে পারবে এমন যে কোনও সদর্থক আলোচনার অংশ হতে আমরা রাজি।’’
একইসঙ্গে হামাস স্পষ্ট করেছে, গাজা থেকে সমস্ত ইজরায়েলী সেনা প্রত্যাহার না করা হলে কোনও শান্তিচুক্তি মানা সম্ভব নয়।
হামাস জানিয়েছে, তাঁদের কাছে প্রস্তাবিত চুক্তির ৩টি ধাপ রয়েছে। প্রথম ধাপে সংঘর্ষ বন্ধ হবে, এবং হামাসের হেফাজতে থাকা ইজরায়েলের বয়স্ক, মহিলা এবং শিশুদের মুক্তি দেওয়া হবে। একইসঙ্গে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ শুরু হবে।
দ্বিতীয় দফায় হামাসের হেফাজতে থাকা মহিলা ইজরায়েলী সৈনিকদের ফেরানোর কাজ শুরু হবে। এই পর্বে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের কাজ আরও গতি পাবে। একইসঙ্গে গাজা পুনর্গঠনের প্রাথমিক কাজও শুরু হবে।
তৃতীয় দফায় গাজার মাটিতে নিহত ইজরায়েলী সৈনিকদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তার বদলে ইজরায়েলের কারাগারে বন্দী কয়েক হাজার প্যালেস্তিনীয়কে মুক্তি দিতে হবে।
এই তিনটি স্তরেই সংঘর্ষ একেবারে বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে কতজন প্যালেস্তিনীয়কে মুক্তি দেওয়া হবে, সেই সংখ্যা নিয়েও আরও আলোচনা চলবে বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।
প্যারিস বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্র রয়েটার্সকে জানিয়েছে, মহিলাদের পাশাপাশি আটক ইজরায়েলী পুরুষ সৈনিকদেরও মুক্তি দিতে রাজি হামাস। কিন্তু তার বদলে বেশি সংখ্যক প্যালেস্তিনীয় বন্দীকে মুক্তি দিতে হবে।
শান্তি প্রক্রিয়া চলার মাঝেই ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের জেনিনের ইবন সিনা হাসপাতালে ঢুকে ৩ প্যালেস্তিনীয় যুবককে খুন করেছে ইজরায়েল। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, চিকিৎসক, রোগী, স্বাস্থ্যকর্মীর ছদ্মবেশে হাসপাতালে ঢুকে গুলি চালাচ্ছে ইজরায়েলী সেনা। ইজরায়েলের দাবি, নিহত ৩জন হামাস সদস্য। সংঘর্ষে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তাঁরা। যদিও ৩ যুবকের পরিবারের সদস্যরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবর থেকে চলা ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষে ২৭ হাজারের কাছে প্যালেস্তিনীয় প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের সিংহভাগ মহিলা এবং শিশু।
Comments :0