আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আইএসএল ম্যাচে মুখোমুখি হতে চলেছে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল।
শেষ ডার্বিতে পরাজিত হয় মোহনবাগান। ফলে, এই ম্যাচ তাঁদের জন্য কার্যত ফিরে আসার মঞ্চ। অন্যদিকে, শেষ ডার্বি জয় এবং কলিঙ্গ সুপার কাপ জিতে লাল হলুদ ব্রিগেডের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। আশা করা যায়, একটি দুর্দান্ত এবং হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ অপেক্ষা করে রয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য।
কলিঙ্গ সুপার কাপের ডার্বিতে সবুজ মেরুনের একাধিক প্রথম সারির ফুটবলার দলে ছিলেন না। কারণ, তাঁরা প্রত্যেকেই জাতীয় দলের হয়ে এশিয়ান কাপ খেলতে উড়ে গিয়েছিলেন কাতার। কিন্তু ইতিমধ্যেই সেই সমস্ত ফুটবলাররা দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এবং অনুশীলনও করছেন জোরকদমে। সাহাল আবদুল সামাদ, মনবীর সিং, দীপক টাংরি, অনিরুদ্ধ থাপা, লিস্টন কোলাসো, শুভশিস বোস এবং ভিশাল কেইথের মতো ফুটবলার ফিরে আসায় দলের শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেইসঙ্গে রাজ বাসফোরে, জেসন কামিংস, হুগো বুমোস, দিমিত্রি পেত্রাতোস, কিয়ান নাসিরি, হেক্টর এবং সাদিকুর মতো ফুটবলাররা তো রয়েছেনই। ফলে, যেকোনও মুহূর্তে ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে সবুজ মেরুন ব্রিগেড।
অন্যদিকে, এই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল পাবে না সৌভিক চক্রবর্তীকে। কার্ড সমস্যায় তিনি খেলতে পারবেন না। ফলে, বিকল্প কে হবেন তা সময় বলবে। কিন্তু হিজাজি মাহের, ক্লেইটন সিলভা, নন্দকুমার, সল ক্রেসপো, নাওরেম মহেশ এবং মন্দার রাও দেশাই সহ গোটা দল সুপার কাপ জয়ের পর যেন টগবগ করে ফুটছে।
কুয়াদ্রাত এসে গোটা টিমের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছেন। সঠিক পরিচালনা এবং বুদ্ধিদীপ্ত পরিকল্পনা দিয়ে যে বাজিমাৎ সম্ভব, তার প্রমাণ দিয়েছেন এই স্প্যানিশ হেডস্যার। হারতে থাকা একটা দলের মনোবল বৃদ্ধি করে জয়ের সরণীতে ফিরিয়ে এনেছেন।
কিন্তু হাবাসের কথা ভুলে গেলেও তো চলবে না। আন্তোনিও লোপেজ হাবাস যেন একেবারে হাতের তালুর মতো চেনেন মোহনবাগান দলটিকে। ভারতীয় ফুটবলে অন্যতম সফল একজন স্প্যানিশ কোচ তিনি। ফলে, তাঁর ক্ষুরধার স্ট্র্যাটেজি যেকোনও মুহূর্তে বিপদে ফেলতে পারে ইস্টবেঙ্গলকে।
বড় ম্যাচে মাঝমাঠ যাঁদের, ম্যাচও তাঁদেরই। ফলে, দুই দলই মাঝমাঠের দখল নিতে চাইবে। আর দর্শকঠাসা যুবভারতীতে ওই গর্জনের সামনে, মাথা ঠাণ্ডা রেখে যে দল পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলাটা খেলতে পারবে, তাঁদেরই জয় নিশ্চিত। যেহেতু সুপার কাপ জয়ের পরই এই ডার্বি ম্যাচ, ফলে ইস্টবেঙ্গল অনেকটা এগিয়ে থেকে মাঠে নামবে বলেই মনে করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। তবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের খেসারৎ দিতে হতে পারে দলকে, যা খুব ভালোমতোই জানেন কুয়াদ্রাত।
ম্যাচের আগেরদিন দুই কোচের গলাতেই যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সুর শোনা গেল। জয় ছাড়া কিছুই ভাবছেন না হাবাস এবং কুয়াদ্রাত, সেই কথা তাঁদের শরীরী ভাষা থেকে স্পষ্ট । তবে দিনের শেষে এটা ডার্বি, আর খেলাটা হবে মাঠে। তাই অঙ্কের হিসেব কষে লাভ নেই, মাঠেই মিলবে জবাব।
Comments :0