Left Front

সোমবার মৌলালীতে অবস্থান বিক্ষোভ রাজ্য বামফ্রন্টের

রাজ্য

মণিপুরের মানুষের প্রতি সংহতি জানাতে, নারী নির্যাতনকারিদের শাস্তি দাবিতে এবং মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সোমবার মৌলালী মোড়ে বেলা ২ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে রাজ্য বামফ্রন্ট। শনিবার প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে একথা জাবনিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।


বিবৃতিতে রাজ্য বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে বিমান বসু বলেছেন, ‘‘গত আড়াই মাস মণিপুরের নাগরিক জীবন জাতিদাঙ্গায় দীর্ণবিদীর্ণ। ইতিমধ্যে প্রায় দেড় শতাধিক নিরীহ মানুষের জীবনহানি ঘটেছে। বহু মানুষ ক্যাম্পে ক্যাম্পে এখনও জীবনযাপন করছেন। সংবাদে প্রকাশ মণিপুরের দুই আদিবাসী রমণীকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় হাঁটানো হয়েছে এবং এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর পুনরায় মণিপুরের নাগরিক জীবন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। কোথাও কোথাও আবার নতুন করে বাড়ি ঘর জ্বলছে।’’ 


মণিপুরের এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে কেন্দ্র এবং সেই রাজ্যের বিজেপি সরকারের ব্যার্থতারও সমালোচনা করেছে রাজ্য বামফ্রন্ট। রাজ্য বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘‘উত্তরপূর্বের ছোট্ট রাজ্যের বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার যথা সময় দাঙ্গা দমন করতে ব্যার্ত হওয়ায় এখনও নাগরিক জীবন বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে চলছে।’’
মণিপুরে মহিলাদের সাথে যেই ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টেও। প্রথম থেকে মণিপুর নিয়ে চুপ থাকলেও সংসদের বাদল অধিবেশনরে প্রথম দিন এই নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে সংসদে মণিপুর নিয়ে কোন আলোচনায় যেতে চাইছে না সরকার। 


মণিপুরে ৩ মে থেকে মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষ চলছে। রাজ্যের বিজেপি সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের ওপর ক্ষোভ নামছে রাস্তায়। গত বুধবার ছড়িয়ে পড়া ভিডিও’তে দেখা যায় উন্মত্ত ভিড় দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটিয়েছে। পরে তাঁদের একজন দল বেঁধে ধর্মণ করা হয়। হত্যা করা হয় আত্মীয়দের। ঘটনা ৪ মে’র। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয় ১৮ মে। অথচ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি রাজ্য প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বীরেন সিং যুক্তি দিয়েছেন যে রাজ্যে এমন শত শত অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু জানাননি তার মধ্যে কোনও একটিতেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা। সরকার গড়তে মেইতেই বনাম কুকি সংঘর্ষ বাঁধানোর অভিযোগ বিজেপি’র দিকে। মেইতেই গোষ্ঠীগুলিকে মদত দিচ্ছে প্রশাসন। নির্যাতিত দুই মহিলার পরিবার শুক্রবারও জানিয়েছে যে পুলিশ কিচ্ছু করেনি। বরং উন্মত্ত বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে তাঁদের। 


সংবাদমাধ্যমে নির্যাতিতদের একজনের মা বলেছেন, আর কোনওদিন নিজেদের গ্রামে ফিরতে পারব না। আমার ছোট ছেলেকেও হত্যা করা হয়েছে। বড় ছেলে কর্মহীন। ভবিষ্যত কী, কিভাবে চলবে কিছুই জানি না। চরম যন্ত্রণায় তিনি বলেছেন, সরকার মানুষকে রক্ষা করতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

Comments :0

Login to leave a comment