বুধবার ভোপালের মোতিলাল নেহরু স্টেডিয়ামে শপথ নেন মধ্যপ্রদেশের নতুন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। তারপরে ক্যাবিনেট বৈঠক করেন। প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠক থেকেই রাজ্যে প্রকাশ্যে মাংস এবং ডিম বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারির পথে হাঁটলেন তিনি। একইসঙ্গে ধর্মীয়স্থানে নির্দিষ্ট শব্দমাত্রার থেকে জোরে লাউড স্পিকার বাজানোর ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
ভোপালে সাংবাদিক সম্মেলন করে মোহন যাদব জানিয়েছেন, ‘‘খাদ্যের গুণমান এবং সুরক্ষা বজায় রাখতে প্রকাশ্যে মাছ, মাংস এবং ডিম বিক্রির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। এবার থেকে মধ্যপ্রদেশে কঠোর ভাবে সেই বিধি মেনে চলা হবে।’’
তিনি জানিয়েছেন, ‘‘সরকারের এই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের সামনে বিষদে তুলে ধরা হবে। ডিসেম্বর মাসের ১৫ থেকে ৩১ তারিখ অবধি এই সংক্রান্ত প্রচার চলবে। খাদ্য দপ্তর, পুলিশ এবং স্থানীয় পৌর সংস্থাগুলি মধ্যপ্রদেশ জুড়ে এই প্রচার চালাবে।’’
মোহন যাদব জানিয়েছেন, ধর্মীয় স্থানে নির্দিষ্ট শব্দমাত্রার থেকে জোরে লাউড স্পিকার কিংবা ডিজে বাজানো হচ্ছে কিনা দেখার জন্য প্রতিটি জেলায় ফ্লাইং স্কোয়াড গঠন করা হবে।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, আরএসএস’র দৃষ্টিকোণ থেকেই এই সিদ্ধান্ত। অন্য রাজ্যেও বিজেপি’র সরকার আমিষ খাবার বন্ধ করে নিরামিষ চালুর ফতোয়া জারি করেছে। যার সঙ্গে আরএসএস’র সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের ধারণা জড়িত। উগ্র হিন্দুত্ববাদের প্রচার করে ভোটে ফয়দা তুলতে সহায়ক হবে মনে করেই এই সিদ্ধান্ত।
কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ৭০ শতাংশের বেশি ভারতীয় মাংস খেয়ে থাকেন। উত্তর ভারতের একটা অংশে উচ্চবর্ণের হিন্দুদের মধ্যে মাংস খাওয়ার তেমন চল নেই। সেই অভ্যাসকে আরএসএস দাগিয়ে দিয়েছে, ‘প্রকৃত হিন্দু মাংস খায় না’ প্রচারে।
বিভিন্ন অংশই বলেছে যে এই সিদ্ধান্তে সব অংশই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কর্মসংস্থান এবং জীবিকায় আঘাত আসবে। সিপিআই(এম) এই বিষয়টি সরবে বলেছে।
বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ক্রমেই নিচের দিকে নামছে ভারত। রাজ্যওয়াড়ি বিচারে মধ্য প্রদেশ দেশের মধ্যেও পিছনের সারিতে। সিপিআই(এম)’র বক্তব্য সরকারের কাজ মানুষের পর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণ সুনিশ্চিত করা। খাবারের দাম সাধ্যের মধ্যে রাখা। খাদ্যাভ্যাস নাগরিকের নিজস্ব অধিকার। তার বদলে ধর্মীয় উগ্রতার রাজনীতিতে নেমে ডিম, মাংস বিক্রি বন্ধের ফতোয়া জারি করছে বিজেপি সরকার।
বিভিন্ন অংশই মনে করাচ্ছেন যে নিরামিষ খান যাঁরা, প্রোটিনের জন্য তাঁদের প্রধান ভরসা ডাল। মোদী সরকারের সাড়ে নয় বছরে ডালের দাম চড়া হারে বেড়েছে।
Comments :0