মেইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ক্লাইমেট রি-অ্যানালাইজার নামে একটি যন্ত্র তৈরি করেছেন। এই যন্ত্রের সাহায্যে বিশ্বের তাপমাত্রা সহ বেশ কিছু বিষয়ে নিয়মিত নজরদারি চালান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
গবেষকদের দাবি, তাঁদের যন্ত্র অনুযায়ী, বুধবার পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ছিল ১৭.১৮ সেলসিয়াস। যা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
এর আগের দুইদিন, অর্থাৎ সোমবার এবং মঙ্গলবারও রেকর্ড করে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা। রি-অ্যানালাইজার অনুযায়ী, সোমবার তাপমাত্রা ছিল ১৭.০১ সেলসিয়াস। মঙ্গলবার সেটি বেড়ে হয় ১৭.১৮ সেলসিয়াস। বুধবারও বজায় ছিল সেই মান।
গবেষক এবং বিজ্ঞানীরা যদিও বেশ কিছুদিন ধরেই সতর্ক করে আসছিলেন, যে ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মুখোমুখি হতে হবে। এর মূলত দুটি কারণ।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, একদিকে জীবাশ্ম জ্বালানীর ফলে বিশ্বের তাপমান বেড়েই চলেছে। কিন্তু ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে চলার প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করত লা নিনা নামের একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। কিন্তু চলতি বছরে সেই লা নিনাকে সরিয়ে দিয়ে তার জায়গা নিয়েছে এল নিনো। তারফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া ছিল সময়ের অপেক্ষা।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, লা নিনা একটি প্রাকৃতিক ঘটনাক্রম, যার মাধ্যমে পৃথিবীর মহাসাগরগুলি শীতল থাকে। কিন্তু চলতি বছরে লা নিনার জায়গা নিয়েছে এল নিনো। এল নিনো‘র ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের মতো মহাসাগরগুলির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এল নিনোর ফলে অতলান্তিক মহাসাগরের তাপমাত্রাও রেকর্ড হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, এল নিনো এবং উষ্ণায়নের জোড়া ফলায় ২০২৩ সালে ব্যাপক বৃদ্ধি পেতে চলেছে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা। মেইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রে ধরা পড়েছে সেই বিষয়টিই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ক্রিস ফিল্ড জানিয়েছেন, এই রেকর্ড থেকেই স্পষ্ট, ‘‘আমরা ক্রমাগত অত্যন্ত উষ্ণ একটি পৃথিবীর দিকে এগিয়ে চলেছি।’’
ক্লাইমেট রি-অ্যানালাইজারের রিপোর্ট সরকারি ভাবে স্বীকৃত না হলেও, এর থেকে সাম্প্রতিক পৃথিবীর একটা চিত্র অবশ্যই স্পষ্ট হয়।
ক্লাইমেট রি-অ্যানালাইজারের অন্যতম সৃষ্টিকর্তা ও মেইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শন বার্কলে জানিয়েছেন, ‘‘ এই রিপোর্ট থেকে ইঙ্গিত পাওয়া সম্ভব, পরিস্থিতি ঠিক কোন জায়গায় রয়েছে।’’
Comments :0