শঙ্কর ঘোষাল- বর্ধমান
কৃষিকেই কর্পোরেটের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। হিমঘর, সার, বীজের ব্যবসা যারা করে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কৃষিকে। বীজ, সার নিয়ে কালোবাজারি চলছে। বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে কৃষককে বেঁচে থাকতে পারতেন। তৃণমূল সরকারে সময়ে সেই ব্যবস্থাকেই ভেঙে ফেলা হচ্ছে। তাই কৃষকরা আত্মঘাতী হচ্ছেন।
তিন দিনে রাজ্যে পাঁচ কৃষকের আত্মহত্যা প্রসঙ্গে সোমবার বর্ধমানে সংবাদমাধ্যমে এই ব্যাখ্যা দিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। একটি সংবাদ চ্যানেল-এ ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘কৃষকের আত্মহত্যা পশ্চিমবঙ্গে আগে শোনা যেত না। কারণ পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও পঞ্চায়েতী ব্যবস্থায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকও বেঁচেবর্তে থাকতে পারেন। তাঁরা মাথা উঁচু করে বেঁচে ছিলেন। কিন্তু তৃণমূল পরিবর্তনের নামে ভূমি সংস্কার জলাঞ্জলি দিয়েছে। কৃষকের হাত থেকে জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।’’
সেলিম বলেছেন, ‘‘সার নিয়ে কালো বাজারী করা হচ্ছে। নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ক্ষতি হলো কৃষকের। কৃষকসভার পক্ষ থেকে রাজ্য জুড়ে ব্লকে ব্লকে কৃষকের ক্ষতিপূরণের জন্য আন্দোলন হচ্ছে। সারের উপর কেন্দ্রীয় সরকার ভর্তুকি কমিয়ে দিল। আর রাজ্য সার নিয়ে কালোবাজারির ব্যবস্থা করে দিল।’’ তিনি বলেন, ‘‘আলু নিয়ে চাষিরা নাজেহাল হচ্ছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আলু চাষিদের খরচ নাকি কমে গেছে। শুধু ফড়ে নয়, গোটা কৃষি কর্পোরেট সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’
সেলিম বলেন, ‘‘বীজ নিয়ে যে কারবার চলছে তাতে মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ী মুনাফা লোটার ব্যবস্থা করা দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আত্মহত্যা বন্ধের জন্য যে ব্যবস্থা, পদ্ধতি নেওয়া দরকার ছিল, স্বামীনাথন কমিটির রিপোর্টে যেভাবে আছে, সেভাবে কাজ হচ্ছে না।’’
২ মাস আগে কলকাতায় সমাবেশ করেছিল কৃষকসভা। রাজ্যে যেখানে কৃষকরা আত্মঘাতী হয়েছিলেন তাঁদের বাড়িতে বাড়িতে গেছেন কৃষক নেতারা। শীতের বৃষ্টির এখন ৫জন আত্মহত্যা করলেন। সেলিম বলেন ‘‘কৃষককে রাজনীতি, সামাজিক ভাবে, গ্রাম থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখন পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে কৃষক পরিবারের ছেলে-মেয়েরা বাইরে কাজে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ কৃষি এখন লাভজনক নয়। হিমঘর, সার, বীজের ব্যবসা যারা করে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কৃষিকে।’’
Comments :0