Lionel Messi

সবচেয়ে সুন্দর অভিজ্ঞতার একবছর: মেসি

খেলা

দেখতে দেখতে একবছর কেটে গেল। চোখের নিমেষেই। গত ১৮ ডিসেম্বর লিওনেল মেসির হাত ধরে ৩৬ বছর আর্জেন্টিনার তৃতীয়বারের জন্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। রুদ্ধশ্বাস ফাইনালটি নির্ধারিত সময়ে ৩-৩ শেষ হওয়ার পর টাইব্রেকারে গোলকিপার এমি মার্টিনেজের জন্যই ৪-২ ব্যবধানে শেষ অবধি জয়লাভ করেছিল লা অ্যালবেসেলেস্তেরা। শুধু আর্জেন্টিনার সমর্থকরাই নয় সমস্ত ফুটবল প্রেমী চেয়েছিলেন বিশ্বকাপ উঠুক মেসির হাতে। মন্টিয়েলের শট জালে জড়াতেই স্বপ্নপূরণ হয় মেসির। তারপরই বাঁধনহারা ফুটবল বিশ্ব। প্রতিটি মুহূর্ত আঁচিয়ে নিয়েছিল ফুটবল প্রেমীরা। মেসির হাতে বিশ্বকাপ উঠতে দেখে। 
একবছর পেরিয়ে যাওয়ার পরই, সবাই সোমবার আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ের স্মৃতিচারণ করলেন। সামাজিক মাধ্যমে আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ের ছবি ছয়লাপ। রবিবার রাত বারোটা বাজার পর শুরু হয়েছিল, থেমেছে পরেরদিন রাত বারোটার পর। মাঝে ভারতীয় সময় রাত ন’টার সময় লিওনেল মেসির নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে বিশ্বজয়ের কয়েকটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুন্দর অভিজ্ঞতার এক বছর... অবিস্মরণীয় স্মৃতি যা সারা জীবন মনে থাকবে। হ্যাপি অ্যানিভারসারি।’
মেসি ছাড়া বিশ্বজয়ী দলের আর কোনও সদস্যই আলাদা করে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। কিন্তু ৩৬ বছর আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ের নেপথ্যের নায়ক কোচ লিওনেল স্কালোনি লরিয়াসকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। 
স্কালোনি সেদিনের শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনাল প্রসঙ্গে বলছেন, ‘২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচটি কখনও ভোলা যাবে না। ম্যাচটি ফুটবলপ্রেমী মানুষদের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে আজীবন। দু’দলই ম্যাচটি এমনভাবে খেলেছে, তাঁরা মনে করেনি যে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ খেলতে নেমেছ। কখনও কখনও ফুটবলারদের মনে ভীতি থাকে, এই ক্ষেত্রে ফুটবলাররা ছিল একেবারে নির্ভীক।’ 
১৯৮৬ পর ২০২২। এতগুলি বছর কেটে যাওয়ার পর বিশ্বজয়ের স্বাদ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। ফলে সেদেশের মানুষ সারা রাত জেগে নেচেছিল (‘ট্যাঙ্গো’) বিশ্বজয়ের আনন্দে। স্কালোনি বললেন,‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের মানুষকে আনন্দে ভাসাতে পেরেছি। এটাই আমাকে আরও খুশি করে তুলেছিল।’ আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর দেখা গিয়েছিল, স্কালোনি একেবারে পাথরের হয়ে গিয়েছিলেন। নিজের অনুভূতি কীভাবে প্রকাশ করবেন বুঝতে পারছিলেন না। তাঁকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল, আনন্দে কান্না গলায় দলা পাকিয়ে রয়েছে, তবুও কাঁদতে পারছেন না। কিছুক্ষণ পরও অবশ্য হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে স্কালোনি। ততক্ষণে বিশ্বজয়ের আনন্দে গোটা মাঠ জুড়ে অবাধ বিচরণ করে বেরাচ্ছেন মেসিরা।
আর্জেন্টিনার যাত্রাটা শুরু হয়েছিল সৌদি আরবের কাছে হেরে। সেদিন মেসি বলেছিলেন, ‘আমাদের উপর ভরসা রাখুন, আমরা হতাশ করব না। তার ঠিক ৩৩ দিন পর চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচের পর কী কথা হয়েছিল ড্রেসিংরুমে। স্কালোনি বললেন, ‘আমরা এটা নিয়ে দশ সেকেন্ড কথা বলেছিলাম। ওই হার ভুলে গিয়ে মেক্সিকো ম্যাচের দিকে ফোকাস করেছিলাম। ম্যাচটা আমরা হেরেছিলাম বটে। কিন্তু আমাদের কাছে সুযোগ ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর।’ 
২০২২ বিশ্বকাপে লিও মেসিকে দেখা গিয়েছিল একেবারে অন্যরূপে। আগ্রাসী মেসি। লড়াকু। যিনি পিছিয়ে পড়লেও মুছড়ে না পড়ে পালটা আক্রমণ করতে জানেন। নেতা মেসিই দলটাকে আমূল বদলে ফেলেছিল। ফলে কাজটাও সহজ হয়ে গিয়েছিল স্কালোনির কাছে। নেতা মেসি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘অধিনায়ক হিসাবে মেসির তুলনা নেই। সে সবসময় দলকে, সতীর্থদের তাতাতে পারে। নেতা হিসাবে উদাহরণ তৈরি করেছে মেসি। বিপক্ষকে হারিয়ে। আমাদের সর্বদা সাহায্য করেছে। মেসিকে কোচিং করিয়ে খুব আনন্দ পেয়েছি।’

 

Comments :0

Login to leave a comment