Haimanti Tea Cultivation

বিরূপ আবহাওয়া, প্রভাব হৈমন্তী চা উৎপাদনে

জেলা

তপন বিশ্বাস-ইসলামপুর

আবহাওয়া প্রতিকূল না হওয়ায় চলতি বছরে হৈমন্তী চায়ের উৎপাদন তলানিতে ঠেকেছে। দুর্গাপূজার পর থেকে আর বৃষ্টি নেই। কালী পুজার পর থেকেই হৈমন্তী চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। কালীপুজোর সময়ে বৃষ্টি হলে হৈমন্তী চায়ের উৎপাদন ভালো হয় এবং সময়কালটাও দীর্ঘায়িত হয়। ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্ব ভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন ,‘‘অন্যান্য বছর কালীপুজোর সময় বৃষ্টি হওয়ায় মোটামুটি ১৫ - ২০ দিন হৈমন্তী চা পাওয়া যায়। কিন্তু এবার কালীপুজো তে বৃষ্টি হয়নি। হৈমন্তী চায়ের উৎপাদন এক সপ্তাহের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। অক্টোবর মাসে ২৫ শতাংশ চা উৎপাদন কম হয়েছে এবং নভেম্বর মাসে ওই উৎপাদন ৩০ শতাংশ কম হবে বলে মনে করছি। কারণ উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই নেমেছে শীতের আমেজ। শীত আসতে শুরু করেছে। একটু একটু করে চা গাছের পাতায় পাতায় জমেছে শিশির। চা গাছের ডগা শক্ত হয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কুড়ি বেরোচ্ছে না। ডিসেম্বর মাসের ১৭ তারিখে পাতা তোলা শেষ দিন। তবে এবার যা আবহাওয়ার অবস্থা তাতে আগেই উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন হৈমন্তী চা সাধারণত উৎকৃষ্ট মানের হয়ে থাকে। তাই বাজারও ভালো পাওয়া যায়। এবার হৈমন্তী চা উৎপাদন কম হওয়ায় উত্তরবঙ্গের চা চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে। 
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে,পাহাড়ি এলাকা বাদ দিলে গত সপ্তাহ খানিক থেকে  উত্তরবঙ্গে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১৫ ও ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠা নামা করছে আর দিনে সর্বাধিক তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘুরছে। অন্যান্য বছর এই সময় তাপমাত্রা কিছুটা হলেও বেশি থাকে। যার প্রভাব পড়ে চা পাতা উৎপাদনে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চা উৎপাদনের নিয়ামক শক্তি হচ্ছে অনুকূল পরিবেশ, সঠিক বৃষ্টিপাত ও স্বাভাবিক তাপমাত্রা। বৃষ্টি এবং রোদের তাপ দুটোই চায়ের জন্য প্রয়োজন। কিন্তু দুর্গাপুজার পর থেকে আর বৃষ্টি নেই উত্তরবঙ্গে এছাড়া তাপমাত্রার কমতে শুরু করেছে তার প্রভাব পড়েছে হৈমন্তী চা উৎপাদনে।
এই কুয়াশায় চা পাতার কী অবস্থা এবং এর কিরূপ প্রভাব পড়ে চা শিল্পে– এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে টি রিসার্চ এসোসিয়েশনের বিজ্ঞানী ড: তৃনা মন্ডল বলেন, অক্টোবরের শেষে বৃষ্টি হলে ভালো মানের হৈমন্তী চা উৎপাদিত হয়। এবার ওই সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় হৈমন্তী চা উৎপাদন হয়েছে খুবই সামান্য পরিমাণে। এছাড়া এবার একটু তাড়াতাড়ি শীত এবং কুয়াশার আগমন হওয়ায় চা গাছগুলো কুঁড়ি ছাড়তে বিলম্ব করছে। কুঁড়ি না বের হলে তো আমরা নতুন পাতা পাবো না। স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য তুলনায় এবার হৈমন্তী চা উৎপাদন খুবই কম হয়েছে।
 

Comments :0

Login to leave a comment