Sambhal Masjid

সম্ভলের মসজিদের কুয়ো নিয়ে স্থিতাবস্থার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

জাতীয়

সম্ভলের জামা মসজিদের কুয়ো নিয়ে কোনোধরনের পদক্ষেপ করতে উত্তর প্রদেশ সরকার এবং সম্ভল জেলা প্রশাসনকে নিষেধ করলো সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ এই নিয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছে। উল্লেখ্য, এই কুয়োটির অর্ধেক অংশ মসজিদ পরিসরের মধ্যে, অর্ধেকটি মসজিদের বাইরে। এই নিয়ে গত বছর ডিসেম্বর মাসে সম্ভল পৌরসভা যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা কার্যকরী করা যাবে না বলে শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি পি বি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। এই নিয়ে পরবর্তী শুনানি ২১ ফেব্রুয়ারি হবে। দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালত জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট তলব করেছে। 

উল্লেখ্য, সম্ভল পৌরসভা নোটিশ জারি করে ওই কুয়োর সাফাই, সম্পত্তির তদন্ত এবং মসজিদের বাইরের অংশ সকলের ব্যবহারের জন্য খুলে দিতে বলে। সুপ্রিম কোর্টে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে আইনজীবী হুফেজ আহমদি আবেদন জানিয়ে বলেন, জেলা প্রশাসনের কুয়োতে সমীক্ষার চেষ্টা এবং এই সংক্রান্ত যা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার উপরে স্থিতাবস্থা দেওয়া হোক। তিনি বলেন, কুয়ো মসজিদ পরিসরের মধ্যে এবং বাইরে উভয় অংশেই আছে। এই অবস্থায় আদালতের নির্দেশ ছাড়া সেটা সার্বজনিক কাজের জন্য খুলে দেওয়া সঠিক হবে না। উত্তর প্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কে এম নটরাজ এই আবেদনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, এটা সকলের ব্যবহারে কুয়ো এবং রাজ্য সরকারের সম্পত্তি। এখন পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ কিন্তু কিছু লোক এখানে সমস্যা তৈরি করতে চাইছে। এরপরে সুপ্রিম কোর্ট মসজিদ কমিটি বলে, জল সবাইকেই ব্যবহার করতে দেওয়া উচিৎ। আপনারা কেন এর বিরোধিতা করছেন? আপনারাই বলছেন কুয়োর অর্ধেক অংশ মসজিদের বাইরে। তাহলে সেখান থেকে লোক জল ব্যবহার করলে অসুবিধা কোথায়? জবাবে আহমদি বলেন, এই কুয়ো বরাবর সম্পূর্ণ ঢাকা দেওয়া ছিল। মসজিদ পাম্পের সাহায্যে কুয়ো থেকে জল নেয়। এই কুয়োর জল সাধারণ মানুষ কখনও কেউ ব্যবহার করেনি। সম্ভল পৌরসভার বিজ্ঞপ্তিতে একে হরি মন্দির বলা হয়েছে। পুজো এবং ভক্তদের স্নানের জন্য কুয়োর জল ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। এরপরে সুপ্রিম কোর্ট উত্তর প্রদেশ সরকারের সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দিয়ে বলে, এইসব কী? বিবাদ বাড়াবেন না। এটা করা উচিৎ হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের থেকে স্ট্যাটাস রিপোর্ট তলব করে সম্ভল পৌরসভার সিদ্ধান্ত কার্যকরী হবে না বলে জানিয়ে দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। 

এই সময় হিন্দুত্ববাদীদের আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আগেই মসজিদ কমিটিকে বলেছিল এলাহাবাদ হাইকোর্টে যেতে, সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে না আসার জন্য। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা জানি কী বলেছিলাম। আমরাও চাই ওনারা হাইকোর্টে যান। কিন্তু আমরা এই ঘটনার উপরে কড়া নজর রাখছি। যাতে হিংসা না হয় এবং সৌহার্দ্য বজায় থাকে। 

উল্লেখ্য, গত ২৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতে মসজিদ সমীক্ষা সংক্রান্ত প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। তাতে আরো জানানো হয় যে সমীক্ষার নির্দেশ যে রিপোর্ট তৈরি করেছে কমিশনার তার রিপোর্ট মুখবন্ধ খামে কোর্টে জমা দিতে হবে। মসজিদ কমিটিকে এনিয়ে সংশ্লিষ্ট উচ্চতর আদালত হাইকোর্টে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে মথুরায় শাহী ইদগা- শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মামলায় এলাহাবাদ হাইকোর্ট ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর হিন্দুত্ববাদীদের আবেদন মেনে সেই স্থানে  মন্দির আছে কি না সেই নিয়ে সমীক্ষার নির্দেশ দেয়। হিন্দুত্ববাদীদের আবেদনের ভিত্তিতে এই সংক্রান্ত ১৫টি  মামলা যুক্ত করে শুনানির মঞ্জুর করে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল। যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এদিন বলেছেন, এই বিষয়ে পরে শুনানি হবে। আদালত কোনো দিনক্ষণ জানায়নি।

Comments :0

Login to leave a comment