Sambhal

সম্ভলের জামা মসজিদ কমিটির সভাপতিকে গ্রেপ্তার

জাতীয়

গত নভেম্বরে এমনই ছবি ছিল উত্তর প্রদেশের সম্ভলে।

উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের শাহী জামা মসজিদ কমিটির সভাপতি জাফার আলিকে রবিবার গ্রেপ্তার করলো উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। গত ২৪ নভেম্বর সম্ভলে যেই সাম্প্রদায়িক অশান্তির ঘটনা ঘটে তাতে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জাফার আলিকে। 
সম্ভলের এসপি জানিয়েছেন, আটক করে জাফারকে কোতোয়ালী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তিনি আরও জানান দাঙ্গার ঘটনায় তার যুক্ত থাকার প্রমান তাদের হাতে আছে। পুলিশ আধিকারিকের কথায়, জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তারির পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জাফার দাবি করেন তিনি নির্দোষ। কোন ভাবে সাম্প্রদায়িক হিংসায় সে মদত দেয়নি। 
পরিবারের দাবি সম্ভল সাম্প্রদায়িক হিংসাকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকার যেই সিট গঠন করেছে সেই সিটে সাক্ষী দেওয়ার কথা ছিল জাফারের। তার আগের রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে। 
হোলির আগে প্রশাসন ডেকেছিল ‘শান্তি বৈঠক’। সম্ভলে সেই বৈঠকেই জুম্মাবারের নমাজের চেয়ে হোলি কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝানোর দায়িত্ব নিলেন পুলিশের সার্কেল অফিসার। 
সম্ভল সার্কেল অফিসার (সিও) প্রশাসনিক বৈঠকে বললেন, ‘‘হোলি আসে বছরে একদিন। আর জুম্মার নমাজ হয় প্রতি শুক্রবার, বছরে হয় ৫২ দিন। যাদের রঙ মাখতে আপত্তি আছে, তাদের উচিত ঘরে বসে থাকা।’’
পুলিশ আধিকারিকের এমন বক্তব্যে তীব্র হয়েছে সমালোচনা। বিভিন্ন অংশেরই বক্তব্য, ফের খুঁচিয়ে উত্তেজনা বাড়াতে চাইছেন সম্ভলের সার্কেল অফিসার অনুজ চৌধুরী। 
১৪ মার্চ হোলির দিন, শুক্রবার রয়েছে নমাজও। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সমস্যা যাতে না হয়, সমাজের বিভিন্ন অংশই তার জন্য সচেষ্ট। এই আবহেই শান্তি বৈঠক ডাকা হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। 
গত নভেম্বরেই অশান্তি ছড়ায় সম্ভলে। পাঁচশো বছরের পুরনো একটি মসজিদ ঘিরে শুরু করা হয় বিতর্ক। স্থানীয় আদালতে আবেদনে বলা হয় যে মন্দির ভেঙে মসজিদটি তৈরি হয়েছে। ফলে মসজিদের সমীক্ষা হোক। দেশে উপাসনাস্থল আইন অনুযায়ী ১৯৪৭’র ১৫ আগস্ট কোনও উপাসনাস্থলের যে চরিত্র তা বদলানো যায় না। তবু উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন অংশ দেশের প্রায় ৫০ জায়গায় নিম্ন আদালতে এই মর্মে আবেদন করে রেখেছে। নিম্ন আদালতে এমন আবেদন গ্রহণও করা হচ্ছে। 
সম্ভলের মসজিদে সমীক্ষার সময় উত্তেজনা তৈরি এবং প্ররোচনার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশেরই বিরুদ্ধে। সমীক্ষা ঘিরে অশান্তিতে ২৪ নভেম্বর পুলিশ গুলি ছোঁড়ে। মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়। সেখানেই প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশ আধিকারিকের এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজেপি-বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদব বলেছেন, এমন পুলিশ আধিকারিককে আগে জেলে বন্দি করা উচিত।

Comments :0

Login to leave a comment