RBI Employee conference

‘ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ রোখার লড়াই দেশ বাঁচাতেও’

জাতীয় কলকাতা

কলকাতায় শুরু হল সারা ভারত রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যসোসিয়েশনের ৩৩ তম জাতীয় সম্মেলন। মঙ্গলবার রিজার্ভ ব্যঙ্কের হলেই উদ্বোধন হয় এই সম্মেলনের। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জাস্টিস কে চান্দ্রু ও অধ্যাপক ভি কে রামাচন্দ্রন। প্রথমে গান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয় সম্মেলন। তরপর একে একে বক্তারা তাদের ভাষণের মাধ্যমে ব্যঙ্ক বেসরকারি করণ সহ সারা দেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করার যে চক্রান্ত করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তার বিরুদ্ধে বলেন। 

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সমীর ঘোষ তাঁর বক্তৃতায়  ভারতীয় অর্থনীতিতে রিজার্ভ ব্যঙ্কের যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তা তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে উল্লেখ করেন দেশের অর্থনীতি ও সরকারকে দিশা দেখায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে যে ভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে তার সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছে তারা। ব্যাঙ্কগুলির কর্মীদের পাশে আছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কর্মচারী সংগঠন। ‘ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কর্মচারীরা যে লাগাতার আন্দোলন করছেন তাকে সমর্থন করছি। কারণ তারা শুধু ব্যঙ্ক নয় দেশের সাধারণ মানুষকেও বাঁচানোর লড়াই করছেন’ বলেন সমীর ঘোষ।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জাস্টিস কে চান্দ্রুও সেই শ্রমজীবী অংশের মানুষের পক্ষেই বলেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন যেভাবে আদানির শেয়ারে এলআইসি ও স্টেট ব্যঙ্ক বিনিয়োগ করেছে তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কেন কিছু বলছে না। তিনি বলেন  ‘সাধারণ মানুষ থেকে কর্মচারীদেরই লড়তে হবে যাতে এই সব সংস্থাগুলো আদানি, আম্বানির হাতে বিক্রি না হয়ে যায়’। সেই সঙ্গে দেশীয় সংস্থাগুলোকে যে ভাবে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার তা নিয়েও সুপ্রিম কোর্টের নীরবতার সমালোচনা করেন প্রাক্তন বিচারপতি।  বিমান বন্দরও কিনছে আদানি যেভাবে সরকারি সমস্ত ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থা থাবা বসাচ্ছে তা যথেষ্ট চিন্তার বলেইও জানান জাস্টিস চান্দ্রু।

আইএসআই’র প্রাক্তন অধ্যাপক ও কেরালা প্ল্যানিং বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে রামাচন্দ্রন ভারতীয় অর্থনীতির বর্তমান অবস্থান নিয়ে  উদ্বেগ জানান। তিনি বলেন ‘দারিদ্র, শিক্ষা, খাদ্য, কর্মসংস্থানের সমস্যা উপেক্ষা করে ভারতীয় অর্থনীতির উন্নতি হওয়া সম্ভব নয়। সারা দেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আন্দোলন হয়েছে। জমি আন্দোলন, কৃষক আন্দোলন, শিক্ষার জন্য আন্দোলন হয়েছে এখন সরকারি সংস্থা বাঁচাতে আন্দোলন করতে হবে। যে কোনও আন্দোলনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রীয় বাজেটেরও তিনি সমালোচনা করেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে যেভাবে অর্থবরাদ্দ কমানো হয়েছে তা নিন্দনীয়। পাল্টা কেরালার উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, বিভিন্ন রাজ্যে যেখানে সরকারি স্কুল ধুঁকছে সেখানে কেরালার বামপন্থী সরকার বাজেটে শিক্ষা ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অর্থ বরাদ্দ করেছে।

Comments :0

Login to leave a comment