Student's union election

ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে ফের শুনানি সোমবার

রাজ্য

সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ছাত্র সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সেই মামলায় এদিনও সরকার পক্ষ কাউন্সিল রুলের আইনি ব্যাখা দিতে পারেনি। আপর দিকে মামলাকারির আইজীবীর পক্ষ থেকে নির্বাচন ঘোষণা করার কথা ও কাউন্সিল বাতিল করার কথা বলা হয়।
এদিন প্রধান বিচারপতি দুপক্ষের কথা শোনার পর আগামী সপ্তাহে অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলকে এই মামলার শুনানিতে হাজির হতে বলেছেন। আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানি হবে। এদিন আদালতে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, সৌম্য দাশগুপ্ত ও ঋতঙ্কর দাস।
ছাত্রসংসদ নির্বাচন চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র। রাজ্য সরকারের কাউন্সিল আইনকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলা দায়ের করেন সেপ্টেম্বর মাসে। আবেদনকারী প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ঋষভ সাহার হয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী ঋতঙ্কর দাস। 
মামলাকারির আইনজীবী ঋতঙ্কর দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ছয় বছর রাজ্যের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি।তিন বছর আগে যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি এবং ডায়মন্ড হারবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। যাদবপুর এবং প্রেসিডেন্সিতে ভোট হয়েছিল এসএফআই জয়ী হয়। মামলাকারির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে যাতে শান্তিপূর্ন ভাবে ভোট হয়।’’ 


রাজ্য সরকারের কাউন্সিল আইন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ইউনিয়ন ইলেকশন নয় নমিনেশন হবে। রাজ্য সরকারের পাশ করা কাউন্সিল আইনে একথা বলা হয়েছে, যা সুপ্রিম কোর্টের কথার সাথে যায়না. এই আইন বাতিল করার কথাও আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই দুই বিষয়ের পাশাপাশি আমরা আরও একটা বিষয় আদালতের সামনে রেখেছি। তা হচ্ছে বহিরাগত বিষয়টি। পাস আউটরা ফেস্ট, পুজো করে এর কি হিসাব রয়েছে? শুধু যাদবপুর নয় রাজ্যের সব ক্যাম্পাস থেকে বহিরাগতদের বার করতে হবে।’’ 
আইনজীবী ঋতঙ্করের কথায়, ‘‘ছাত্র সংসদ নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ন ভাবে হয় তার জন্য প্রধান বিচারপতির ডিভিসন বেঞ্চে মামলাকারির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে যে প্রয়োজনে আদালতের পক্ষ থেকে একটি প্যানেল তৈরি করা হোক যাদের নজরদারিতে ছাত্র ভোট হবে।’’
রাজ্যে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোয় শেষ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় ২০১৭ সালে। সেই নির্বাচন প্রসঙ্গে এসএফআই বার বার দাবি করে এসেছে যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ গায়ের জোড়ে ভোট না করে বিরোধীদের মনোনয়ন দিতে না দিয়ে ছাত্র সংসদ দখল করেছে।
দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্টা দিবসের সমাবেশের মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘পুজোর পর আপনাদের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে। শান্তিপূর্ন ভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে হবে। আমরা যেমন শান্তিপূর্ন ভাবে নির্বাচন করি আপনারাও তেমন ভাবে করবেন।’’ এখানে না থেমে মঞ্চে বসে থাকা দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘‘ছেলে মেয়েরা যাতে ভালো ভাবে ভোট করতে পারে সেইদিকটা দেখবে তোমরা। ওদের সাহায্য করবে।’’

২০১১ সালের আগে থেকেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় প্রান গিয়েছে এসএফআই কর্মীর। হাওড়ার আন্দুল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হাতে খুন হন এসএফআই কর্মী স্বপন কোলে। তারপর এই ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কলেজ ক্যাম্পাস গুলো। কোথাও বিবরোধী ছাত্র সংসদের সদস্যদের ওপর আক্রমণ তো কোথাও তাদের মনোনয়ন দিতে না দেওয়া। বিগত ১২ বছরে যেই দুইবার ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে তাতে বেলাগাম অশান্তির সাক্ষী থেকেছে রাজ্য।

Comments :0

Login to leave a comment