প্রকাশ্য রাস্তায় কুপিয়ে খুন করা হলো নির্যাতীতা এক যুবতীকে। ঘটনা ঘটেছে যোগীর রাজ্য উত্তরপ্রদেশে। মঙ্গলবার সকালে ওই রাজ্যের কৌসাম্বী জেলায় ধর্ষনের শিকার এক নির্যাতীতাকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত ব্যাক্তি এবং তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে অভিযুক্ত পবন নিশাদের বিরুদ্ধে ধর্ক্ষনের অভিযোগ এনে পুলিশে নালিশ করে নিহত যুবতীর পরিবার। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পবন এবং তার ভাইকে গ্রেপ্তারও করা হয়। কিন্তু কবেকদিন আগে জামিনে মুক্তি পেয়েছে দুই অভিযুক্ত। তারপর থেকেই নির্যাতীতা এবং তার পরিবারের সদস্যদের ওপর তারা বিভিন্ন ভাবে চাপ তৈরি করতে থাকে যাতে তারা মামলা তুলে নেয়। পুলিশের অনুমান তাদের সেই কথা না শোনার কারণেই প্রকাশ্য রাস্তায় কুপিয়ে মারা হয়েছে যুবতীকে।
ঘটনাটি যখন ঘটে তখন রাস্তায় লোক থাকলেও কেউ অভিযুক্তদের থামাতে এগিয়ে আসেননি। ওই ঘটনার পর দুই ভাই পলাতক বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে ইতিমধ্যে তল্লাসি শুরু করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা প্রায় প্রতিদিনই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। এনসিআরবি’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১ সালে উত্তরপ্রদেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৫৬ হাজার। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং বিজেপি দাবি করে আসে যে উত্তরপ্রদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সংস্থার পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট সুশাসনের চিত্র। গোটা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে বেআইনি কাজ, নারী নির্যাতন, সাম্প্রদায়িকতা বেড়ে চলেছএ। রাম মন্দির, জ্ঞানবাপীর নাম করে রাজ্যের শাসক দল রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যোগী সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। তারা তাদের এক্সহ্যান্ডেলে লিখেছে যে, ‘উত্তরপ্রদেশে মহিলারা নিরাপদ নয়। তারা যদি তাদের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন তবে তাদের খুন হতে হচ্ছে।’ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আরও লেখা হয়েছে যে, আইনের শাসন না থাকায় দুষ্কৃতির মনে কোন ভয় নেই।
উল্লেখ্য দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী কোন পদক্ষেপ না নিয়ে ‘যমরাজের’ ওপর ভরসা রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কয়েক মাস আগে আম্বেদকার নগরে এক কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনায় যোগীকে বলতে শোনা যায়, ‘যারা মহিলাদের ওপর অত্যাচার করছে তাদের যমরাজ শাস্তি দেবে।’
সেই ঘটনায় অভিযুক্তরা চলন্ত বাইকে থাকা কিশোরীর জামা টেনে ধরে যারা ফলে সে পড়ে যায়। পিছন থেকে একটি গাড়ির ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়।
যেই রাজ্যে নারী নির্যাতনের ঘটনা সব থেকে বেশি সেই রাজ্য থেকেই সাংসদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনিও এই সব ঘটনায় নীরবতা বজায় রেখেছেন।
Comments :0