লোকসভায় বন্দে মাতরম নিয়ে আলোচনায় একতরফা কংগ্রেসকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, বন্দে মাতরমের ঐতিহ্যকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। কংগ্রেস বন্দে মাতরমের সাথে আপস করে। মুসলিম লীগের কাছে আত্মসমর্পণ করে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নেহরু বন্দে মাতরমের ‘টুকড়ে-টুকড়ে’ করেছিলেন। তার কথায় বন্দে মাতরমকে প্রথমে ভাগ করা হয়েছিল তার দেশ ভাগ করা হয়েছিল।
আরএসএসের রাজনৈতিক শাখার নেতা প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা এদিন আলোচনার সময় শোনা যায় স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মন্ত্র ছিল বন্দে মাতরম। বহু শহীদ এই বন্দে মাতরম বলে ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যু বরণ করেছেন। ইংরেজ সরকার বন্দে মারতমকে নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু এই বন্দে মাতরম স্লোগান বহু মানুষকে এক করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়।
উল্লেখ্য বিজেপি বা আরএসএস কোন সময় বন্দে মাতরম নিয়ে কোন আবেগ দেখায়নি। কিন্তু সামনে যেহেতু পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন, সেই কথাকে মাথায় রেখে বন্দে মারতমের ১৫০ বছরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে।
বিজেপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে মাথায় রেখেই বন্দে মাতরম নিয়ে শুরু করেছে রাজনীতি।
১৯৩৭ সালে তৎকালীন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেস জাতীয় সমাবেশের জন্য শুধুমাত্র প্রথম দুটি স্তবক ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। যুক্তি ছিল যে হিন্দু দেবদেবীদের সরাসরি উল্লেখ মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু সদস্যের দ্বারা ভালোভাবে গৃহীত হয়নি। এগুলিকে 'বহির্ভূত' হিসেবে দেখা হত।
প্রস্তাবে লেখা ছিল: "সকল বিষয় বিবেচনা করে, কমিটি সুপারিশ করে যে যখনই জাতীয় সমাবেশে 'বন্দে মাতরম' গাওয়া হয়, তখন কেবল প্রথম দুটি স্তবক গাওয়া উচিত"।
বিজেপির যুক্তি বাদ দেওয়া কংগ্রেসের 'বিভাজনকারী' পরিকল্পনার প্রতিফলন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন যে স্তবকগুলি বাদ দেওয়া জাতির বিভাজনের বীজ বপন করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে ভারতে সব থেকে বেশি সাম্প্রদায়িক এবং বিভাজনের রাজনীতি করেছে বিজেপি। ধর্মের ভিত্তিতে যেমন তারা মানুষকে ভাগ করেছে। তেমন ভাবে ভাষার ভিত্তিতেও তারা মানুষকে ভাগ করেছে। বাংলায় কথা বললে ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর আত্যাচার করা হচ্ছে। বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করা হচ্ছে। সেই নিয়ে নীরব সরকার। এদিনও কোন কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ পাল্টা বলতে উঠে বলেন, বিজেপি যতই নেহেরুকে ছোট করার চেষ্টা করুক তারা তা করতে পারবেন না। তিনি বলেন, বিজেপি বাংলাকে বোঝে না। বঙ্কিম চন্দ্রকে বোঝেন না। তাই তারা বাংলার সব বিষয়কে বাংলাদেশী বলে চিহ্নিত করে।
গত মাসে বিজেপির মুখপাত্র সিআর কেশবন ১৯৩৭ সালের সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে নেতাজি সুভাষ বোসকে লেখা নেহরুকে লেখা এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বিতর্ক উস্কে দেয়।
Bande Mataram Discussion
বন্দে মাতরম নিয়ে আলোচনাতেও ‘সাম্প্রদায়িক’ মোদী
×
Comments :0