VIOLENCE AGAINST MIGRANTS IN EUROPE

শরণার্থীদের উপর ‘অমানুষিক’ অত্যাচার ইউরোপে; রিপোর্ট গার্ডিয়ানের

আন্তর্জাতিক

migrant crisis europe violence against migrants european union কাঁটাতারের ওপারে অপেক্ষায়

পশ্চিমী ভাষ্য অনুযায়ী, উদার গণতন্ত্রের ভূমি হল ইউরোপ। ইউরোপের মাটিতে এশিয়া কিংবা আফ্রিকার মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বিরল বললেও কম। ইউরোপ শরণার্থীদের অধিকার রক্ষার প্রশ্নে সর্বদা সজাগ। কিন্তু এই জাতীয় ধারণা যে কতটা ভ্রান্ত, তা বেআব্রু হল একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টে। 

সম্প্রতি শরণার্থীদের অধিকার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করা একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বর্ডার ভায়োলেন্স মনিটরিং নেটওয়ার্ক’র তরফে একটি ৩১৭৩ পাতার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেই রিপোর্টে শরণার্থীদের উপর কয়েক হাজার আক্রমণের ঘটনাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। 

এই রিপোর্টের ভিত্তিতে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইংল্যান্ডের দ্যা গার্ডিয়ান পত্রিকা। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬৩৩জন শরণার্থীর সাক্ষাৎকার ঠাঁই পেয়েছে এই রিপোর্টে। সেই সাক্ষাৎকারগুলি মোতাবেক, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত, এবং তার বাইরে থাকা ১৫টি ইউরোপীয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী শরণার্থীদের উপর ‘অমানুষিক’ অত্যাচার চালিয়েছে। 

এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকা থেকে সর্বস্বান্ত হয়ে আসা শরণার্থীদের উপর কুকুর লেলিয়ে দেওয়া, পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া, কিংবা যৌন নির্যাতন- শরণার্থীদের প্রবেশ ঠেকাতে কোনও কিছুই বাদ রাখেননি ইউরোপীয় সীমান্তরক্ষীরা। এছাড়া মারধর করা, কিংবা বেআইনি ভাবে আটক করার ঘটনাও ঘটেছে লাগামছাড়া হারে।  রেয়াত করা হয়নি শিশু এবং কিশোরদেরও। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া শরণার্থীদের মাত্র ৫ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁদের কোনও ধরণের অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হয়নি। 

বর্ডার ভায়োলেন্স মনিটরিং নেটওয়ার্ক’র রিপোর্টের দাবি, ২০১৭ সাল থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস অবধি ২৫ হাজারের বেশি শরণার্থীকে বলপূর্বক এশিয়া কিংবা আফ্রিকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। কেবলমাত্র ২০২১-২২ সালের মধ্যেই ফেরত পাঠানো হয়েছে ১৬ হাজারের বেশি শরণার্থীকে। মজার বিষয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংবিধান অনুযায়ী ইউনিয়ন ভুক্ত কোনও দেশই এমন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনা, যার ফলে শরণার্থীদের ফের একবার যুদ্ধ পরিস্থিতি কিংবা অন্য কোনও অস্থিরতার মধ্যে গিয়ে পড়তে হয়। কিন্তু তারপরেও পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, গ্রিসের মতো ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলির সীমান্তে  অত্যাচারের মুখোমুখি হয়েছেন শরণার্থীরা। 

যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থাকা সার্বিয়া, আলবানিয়া কিংবা উত্তর ম্যাসিডোনিয়া প্রশাসনের তরফেও একই ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বেলারুশ হয়ে পশ্চিম ইউরোপে শরণার্থীদের প্রবেশ আটকাতে সীমান্ত জুড়ে কাঁটাতার এবং পাঁচিল তোলা শুরু করেছে পোল্যান্ড। 

 

Comments :0

Login to leave a comment