Weather

নামে এসেছে বর্ষা, ঘামে অস্থির মানুষ

রাজ্য

বর্ষা এলেও স্বস্তি যেন কিছুতেই মিলছে না। যখন তখন আকাশ কালো হলেও বৃষ্টির দেখা নেই। আবার বৃষ্টি হলেও তা বেশি সময় না হওয়ায় গরম কমছে না। বাড়তি আর্দ্রতার জেরে চূড়ান্ত অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে চলতে হচ্ছে ভরা বর্ষাকালে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্র জানাচ্ছে, বর্ষা ঢোকার পর থেকে গাঙ্গেয় উপকূল জেলায় বৃষ্টি হয়েছে ঠিকই। তবে ভারী বৃষ্টি কোথাও হচ্ছে না। বর্ষা এখন তেমন সক্রিয় না থাকার জন্য এই সমস্যা। আপাতত দিন কতক এমন চলবে।  
দীর্ঘদিন গরমে ভাজা ভাজা হওয়ার পর ২১ জুন দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা এসেছে। বর্ষার আগে সেই অর্থে প্রাক-বর্ষা এবারে হয়নি। মাঝেমধ্যে বিক্ষিপ্ত একটু বৃষ্টি হয়েছে। তাও আবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাকে স্পর্শ করেনি। তবুও বর্ষা আসায় তীব্র গরম থেকে মুক্তি মিলবে এমনটাই সকলের আশা ছিল। কিন্তু সে আশায় জল ঢেলে দিয়েছে মৌসুমি বায়ু।  কিন্তু সেই মুষলধারে বৃষ্টির দেখা নেই। কিছু-কিছু  এলাকায় দু-এক পশলা বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু তা সামান্য। গরমের চাইতেও ঘামে জেরবার হচ্ছে মানুষ। 
বাতাসে বাড়তি আর্দ্রতার জেরে কিছুতেই গায়ের ঘাম যাচ্ছে না। সকাল কী রাত, পাখার হাওয়ার বাইরে গেলেই ঘেমে নেয়ে একসার হতে হচ্ছে। জলীয় বাষ্পের জেরে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি প্রতিদিনই যেন বাড়ছে। বর্ষায় বৃষ্টির বদলে ঘামেই ভিজছে শহরবাসী। এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার কোনও উপায় মিলছে না। কলকাতায় সোমবার আর্দ্রতার সর্বোচ্চ পরিমাণ ছিল ৮৬ শতাংশ। বৃষ্টি না হলে এই বাড়তি জলীয় কণার উপদ্রব কিছুতেই কমবে না। ফলে অসহ্য এই ঘাম কমবে না।
সোমবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের চাইতে এই তাপমাত্রা ১.২ ডিগ্রি বেশি। তবে রাতের তাপমাত্রা এখনো ২৮ ডিগ্রির আশেপাশেই থাকছে। সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য প্রায় ৭ ডিগ্রি হলেও পাখার বাইরে গেলেই দরদরিয়ে ঘাম হচ্ছে। বৃষ্টির রাতে ঠান্ডা পরিবেশে রাতে শোওয়ার উপায় নেই আপাতত। তবে হাওয়া অফিস অবশ্য নিরাশ হচ্ছে না। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকছে। দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় এখনও ঠিকমতো মৌসুমি বায়ু পৌঁছায়নি। সব জায়গায় পৌঁছালে জাঁকিয়ে শুরু হবে বর্ষা।
এখনও পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বীরভূম, বর্ধমান সহ পশ্চিমের কিছু এলাকায় মৌসুমি বায়ু পুরোপুরি ঢুকতে বাকি রয়েছে। আগামী বুধ, বৃহস্পতিবার নাগাদ দক্ষিণবঙ্গের বাকি এলাকাতেও মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করবে। মৌসুমি বায়ু তেমনভাবে সক্রিয় না হওয়ার জন্য আবহবিদরা অবশ্য উত্তরবঙ্গের উপর থাকা অক্ষরেখাকে দায়ী করেছে। আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত ওই অক্ষরেখাটি এতদিন উত্তরবঙ্গে বাড়তি বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছে। আর এখন সেটি বঙ্গোপসাগর দিয়ে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকিয়ে দক্ষিণবঙ্গে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বাড়াচ্ছে। এখন উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টি থেকে সাময়িক বিরতি মিললেও জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিঙ, জলপাইগুড়ি জেলাতে বৃষ্টি চলবে। এরই মধ্যে সোমবার মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

 

Comments :0

Login to leave a comment