17C ELECTION COMMISSION

ভোটের সংখ্যাও দিচ্ছে কমিশন, সেলিম বলছেন ‘পালটাচ্ছে হাওয়া’

জাতীয়

ভোট নেওয়া হয়ে গিয়েছে এমন কেন্দ্রগুলির ভোটদানের সংখ্যা বের করল নির্বাচন কমিশন। এই সংখ্যা বের করারই কথা। কিন্তু এবার কমিশন তা না করায় প্রতিবাদ গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। 
শনিবার ষষ্ঠ দফা ভোটের সময়পর্ব, বিকেল পাঁচটা, শেষ হতেই কমিশন ভোটের মোট সংখ্যা আপলোড করেছে বলে জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে এই কমিশনই সওয়ালে প্রকৃত সংখ্যা না জানানোর জন্য সওয়াল চালিয়েছিল। এমনকি, ১৭সি ফর্ম, যেখানে বুথভিত্তিক মোট ভোটারের সংখ্যা থাকে, তা আপলোড করলে, মিম ছড়িয়ে পড়বে, এমন যুক্তিও দেওয়া হয়েছিল কমিশনের তরফে!
সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায়, ভোট চলার মাঝে, কমিশনকে সংখ্যা বের করার নির্দেশ দিতে চায়নি। কিন্তু ভোট শেষ হওয়ার পর যে মামলা গড়াবে সেই ইঙ্গিত ছিল। 
কমিশনের সিদ্ধান্তে শনিবার কলকাতায় সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আইন পালটায়নি। বিধিও পালটায়নি। কিন্তু হাওয়া পালটাচ্ছে। যে কমিশন সুপ্রিম কোর্টে লাগাতার তথ্য প্রকাশের বিরোধিতা করেছিল কালও তাকে আজ তথ্য বের করতে হচ্ছে।’’ এই লড়াইয়ে বিভিন্ন অংশের ভূমিকা উল্লেখ করে সেলিম বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজকে সজাগ সতর্ক থাকতে হবে। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য তা জরুরি।’’
কমিশন প্রথম দু’দফার ফল ঘোষণা করে প্রথম দফার ভোট মিটে যাওয়ার ১১ দিন পর। দ্বিতীয় দফার ভোটও হয়ে গিয়েছিল চূড়ান্ত মতদানের হার প্রকাশের ৬ দিন আগে। দেখা যায় চূড়ান্ত তথ্যে ভোট দানের হার ৬ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু ঠিক কত ভোট পড়ল সেই সংখ্যার উল্লেখ নেই, রয়েছে কেবল হার। লোকসভা কেন্দ্রগুলির কোন বিধানসভার কোন বুথে কত ভোট পড়েছে সেই সংখ্যা কমিশনের ওয়েবসাইটে ছিল না। ফলে গণনার সময় কারচুপির শঙ্কা প্রবল হয়। 
সংখ্যার দাবি জানিয়ে কমিশনকে চিঠি লেখেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও কারচুপির আশঙ্কা জানান প্রকাশ্যে। নির্বাচনী প্রচারেও উঠতে থাকে বিষয়টি। তার ওপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষভাষণ দিয়ে চললেও কমিশন চুপ থাকায় সন্দেহ গাঢ় হয় সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা নিয়ে। সুপ্রিম কোর্টে কমিশন স্বস্তি পেলেও তা যে দীর্ঘস্থায়ী না-ও হতে পারে, এই সন্দেহ জানিয়েছিল বিভিন্ন মহলই। শনিবার শেষ পর্যন্ত প্রকৃত সংখ্যা বের করতে হলো কমিশনকে। 
সেলিম বলেন, ‘‘এরাজ্যের সরকারের মতো দিল্লির সরকারও তথ্য দিতে চায় না। নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। যেমন আমরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে সময় দেখেছি এরাজ্যে।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মোদী সরকারকে জনতাকে তথ্য জানাতে চায় না দেখা গিয়েচিল নির্বাচনী বন্ডের সময়ও। সিপিআই(এম) এবং নাগরিক সমাজ লড়াই করে, আদালত থেকে রায় বের হওয়ায় তথ্য জানাতে হয়। দলের তহিবলে টাকা নিয়ে ব্যবসায়িক সংস্থাকে সুবিধা দেওয়া বেরিয়ে পড়ে।’’
সেলিম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে প্রশাসন পুলিশকে ব্যবহার করে ভোট লুট করা হয়েছে। চাকরি এবং ওবিসি সার্টিফিকেটের মতো লুট। এখন ইভিএম লুট, রায় লুটের চেষ্টা চলতে পারে। কেন্দ্রের সরকারও একই পথে চলছে। আমরা সতর্ক আছি। ইভিএম পাহারা দেওয়া হচ্ছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment