গার্ডেনরিচে দুর্ঘটনায় বাড়ল মৃতের সংখ্যা। রবিবার রাতে ভেঙে পড়ে বহুতল সেদিন রাত থেকে চলে উদ্ধার কাজ। সোমবারের পর মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের উদ্ধারকাজ শুরু হয়। মঙ্গলবার সন্ধায় এসএসকেএমম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে। মৃতের নাম মহম্মদ জামিল(৪০)। গার্ডেনরিচের বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় কেটে গিয়েছে দু-রাত দু'দিন। এখনও সেখানে চলছে উদ্ধারকাজ। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মোট আহতের সংখ্যা ১২। বর্তমানে গার্ডেনরিচের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ জন। এসএসকেএম হাসপাতালে আশঙ্কাজন ৩ জন।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃত ১০ জনের মধ্যে দু'জন এই ভেঙে পড়া বহুতলের কাজে কলকাতায় এসেছিলেন। এঁরা হলেন ভগবানগোলার শ্রমিক নাসিরউদ্দিন শেখ(২৪)। আরেকজন সেখ আবদুল্লা(১৮)। মাত্র চার মাস আগেই বিয়ে হয়েছিল আবদুল্লার। পেটের টানে মাটির বাড়ি পাকা করতে হুগলির খানাকুলের পোল ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের পাতুল গ্রামের সেখ আবদুল্লা(১৮) গার্ডেনরিচের ওই বহুতলে শ্রমিকের কাজ করতে এসেছিল। রবিবার মধ্যরাতে ওই বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর। খানাকুলের গ্রামের কাঁচা ঘরটা পাকা করতে বহুতলের কাজে গিয়ে আর ফেরা হলনা। শোকস্তব্ধ পরিবার। হুগলির খানাকুলের পোল ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের পাতুল গ্রামের সেখ আবদুল্লা(১৮)। দিন পনেরো আগে স্থানীয় এক আত্মীয়ের সঙ্গে রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ের কাজে গিয়েছিল। তার আগে ভিনরাজ্যে সোনার কাজের সাথে যুক্ত ছিল। কাজের মন্দা থাকায় বাড়ি ফিরে আসে। নিজেদের মাটির বাড়িটা পাকা করতে হবে তাই টাকার প্রয়োজনে কয়েকদিন আগে রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ের কাজে যায়।
রবিবার রাতে গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এই খবর বাড়িতে আসতেই শোকের আবহ তৈরি হয়েছে মৃতের পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে।
আবদুল্লার এক আত্মীয়া নাজমা বেগম বলেন, ‘‘দিদিমার কাছে থাকত আবদুল্লা। তারঁ কাছে থেকেই বড় হয়। কাঁচা ঘরটা পাকা করবে বলেছিল। সোনার কাজে মন্দা থাকায় বাড়ি ফিরে আসে। বলেছিল কয়েকদিন কলকাতায় কাজ করে টাকা জমিয়ে বাড়ির কাজ শুরু করবে। দুর্ঘটনার পর ফোনে খবর দেয় কেউ একটা। তারপর ওর মামারা যায় সেখানে’’।
প্রতিবেশি সেখ আজিজুল জানান,‘‘খুব গরীব পরিবারের ছেলে আবদুল্লা। রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়েছিল গার্ডেনরিচে। রাতে বহুতল ভেঙে পরে তার মৃত্যু হয়। আমরা চাই প্রশাসন যেন এই পরিবারের পাশে থাকে’’।
গার্ডেনরিচের ওই বহুতল যে বেআইনি ভাবে বিনা অনুমতিতেই নির্মাণ শুরু হয়েছিল, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ধৃত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিম। ঝুপড়ির উপর বেআইনি বাড়ি ভেঙে মৃত্যুর হয়েছে ১০ জনের। ধৃত প্রোমোটারের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা সহ একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। এদিন তাকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশ হেপাজত হয়েছে।
এদিন কলকাতা হাই কোর্টে বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত একাটি মামলায় স্থগিতাদেশ জারি করে দেন বিচার পতি অমৃতা সিনহা। তিনি বলেন, বেআইনি চিহ্নিত হবার পরে সেই বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে বারতি সময় দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবেনা। আগে জীবন বাঁচাতে হবে। এক্ষেত্রে আদালত হস্তক্ষেপ করবে না। আবেদনের শুনানির আর্জি খারিজ করে দেন তিনি।
Building Collapse
গার্ডেনরিচে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০
×
Comments :0