নতুনপাতা : গল্প
ঘুড়ি-লাটাই-সুতো
সৌরীশ মিশ্র
"কি রে, দাঁড়িয়ে পড়লি কেন?"
দশ বছরের সূর্য ওর মা-র সাথে বাজারে এসেছে। মা-র পাশে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই থমকে দাঁড়িয়ে পড়ায় সূর্যকে কথাটা বললেন ওর মা।
"মাম, ঘুড়ি।"
তাঁর ছেলে ডান হাত উঁচিয়ে যে দিকে দেখাচ্ছে, সেই দিকে সূর্যর মা তাকিয়ে দেখেন, বাজারের যে গলিটা ধরে তারা যাচ্ছে তার পরপর তিনটে দোকানে ঘুড়ি, লাটাই বিক্রি হচ্ছে।
"বিশ্বকর্মা পুজো মঙ্গলবার, তাই না মাম?" ফের বলে সূর্য।
"হ্যাঁ রে। তা তুই ঘুড়ি কিনবি? কিনে দেবো?"
"কিনে কি করব! আমি কি ঘুড়ি ওড়াতে পারি! বাপি তো বলেছিল কিছুদিন আগে, এই বিশ্বকর্মা পুজোয় আমাকে শেখাবে। তা বাপি তো পরশু হঠাৎ করে সেমিনারে চলে গেল দিল্লি। সেই আসবে বিশ্বকর্মা পুজোর পরের পরের দিন। তবে?"
"তোর বাপি নেই তো কি আছে। আমি তো আছি। আমি তোকে শেখাবো।"
"তুমি ঘুড়ি ওড়াতে জানো মাম!"
"জানি।"
"কার কাছে শিখলে?"
"তোর মামার কাছে। ছোটবেলায় আমি আর তোর মামা খুব ঘুড়ি ওড়াতাম বিশ্বকর্মা পুজোয়, জানিস।"
"কোথা থেকে ওড়াতে?"
"কেন! আমাদের বাড়ির তিনতলার ছাদটা থেকে। কি মজাই না হোতো সারাটাদিন। চল্, তোকে ঘুড়ি-লাটাই-সুতো সব কিনে দিই। এইবার বিশ্বকর্মা পুজোয় আমি আর তুই ঘুড়ি ওড়াবো খুব। দেখবি, কেমন মজা হয়।"
"দারুণ হবে মাম। দারুণ হবে।"
"তবে চল্ ঐ দোকানটায় যাই। ঐটাতেই দেখছি অনেক রকম ঘুড়ি আছে।"
মা-র সাথে সূর্য পা বাড়ায় ঘুড়ির দোকানটার দিকে।
সূর্যর আনন্দ যেন আর ধরছে না।
Comments :0