ত্রিপুরায় বিজেপি দুষ্কৃতীদের বেপরোয়া হামলার প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভের ডাক দিল সিপিআই(এম)। ত্রিপুরা প্রশাসন এবং পুলিশের উদ্দেশ্যে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরোর দাবি, এখনই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হস্তক্ষেপ করতে হবে। আর্থিক সহায়তা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে আক্রান্তদের জন্য।
২ মার্চ ফল ঘোষণার পর থেকে উন্মত্ত আক্রমণ চালাচ্ছে বিজেপি’র দুষ্কৃতীরা। বামফ্রন্ট এবং সিপিআই(এম) সমর্থকদের তো বটেই, হামলার শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষও। রবিবারই রাজ্যে প্রতিবাদে নামার ডাক দিয়েছে সিপিআই(এম) এবং বামফ্রন্ট। পশ্চিমবঙ্গেও ৯ মার্চ ত্রিপুরায় পরপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট।
ত্রিপুরায় ভোট পরবর্তী হামলা প্রসঙ্গে পলিট ব্যুরো বলেছে, ‘‘সিপিআই(এম)’র বিরুদ্ধে ভোটের পরই বর্বর হিংসা চালাচ্ছে বিজেপি। বামফ্রন্ট এবং বিরোধী অন্য দলের কর্মীদের ওপরও চলছে আক্রমণ। ২ মার্চ ফল ঘোষণার মধ্যে, বিজেপি যখন গরিষ্ঠতার দিকে খানিক এগিয়েছে, হিংসার একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকে। দিনের আলোয় কিভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয় ত্রিপুরায় তার নমুনা দেখাচ্ছে বিজেপি।’’
পলিট ব্যুরো বলেছে, ‘‘সামান্য ব্যবধানে গরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি। ফলাফলের এই বাস্তবতা আসলে মানতে চাইছে না। গতবারের তুলনায় ১০ শতাংশ ভোট কমেছে বিজেপি’র। বিজেপি জোট ১১টি আসন খুইয়েছে। সেই কারণেই হিংস্র আক্রমণের স্রোত নামিয়েছে বিজেপি।’’
ত্রিপুরায় ভোটের ফল বেরিয়ে ২ জানুয়ারি। সামান্য ব্যবধানে জয়ী হয়েছে বিজেপি জোট। ৬০ আসনের বিধানসভায় বিজেপি পেয়েছে ৩২টি আসন, জোটসঙ্গীকে নিয়ে ৩৩ আসন। বিরোধী ভোট ভাগাভাগির কারণে সুবিধা পেয়েছে বিজেপি। ভোট প্রাপ্তির হার ৩৮ শতাংশের কাছে।
ত্রিপুরায় বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দও বলেছেন যে ৪০ শতাংশ ভোটও পায়নি নরেন্দ্রমোদী, অমিত শাহের দল। বিজেপি’র বিপক্ষে ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। তারপরও অবিরাম হিংসা চালাচ্ছে।
পলিট ব্যুরো বলেছে, ‘‘রাজ্যজুড়ে ব্যাপক সংখ্যায় হিংস্র আক্রমণে সিপিআই(এম) সমর্থকদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। শারীরিক আক্রমণ হচ্ছে। জরিমানা নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবিকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। ১ হাজারের ওপর হামলায়, এর মধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩ জন, তার ৬৬৮টি ঘটনার বিশদ বিবরণ প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছে সিপিআই(এম) এবং বামফ্রন্ট প্রতিনিধিদল।’’
পলিট ব্যুরো বলেছে, ‘‘রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশের কাছে দাবি, এখনই আইন শৃঙ্খলা ফেরাতে ব্যবস্থা নিন। আক্রান্তদের আর্থিক এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।’’
পলিট ব্যুরোর আহ্বান, সারা দেশে সব জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে হবে। ত্রিপুরায় গণতন্ত্রের হত্যা এবং বিজেপি’র সন্ত্রাসের রাজনীতির প্রতিবাদ জানাতে হবে।
Comments :0