দীপশুভ্র সান্যাল, জলপাইগুড়ি
অধিকার বুঝে নেওয়ার লড়াইয়ে রাজ্যজুড়ে পদযাত্রা করবেন সরকারি কর্মচারীরা। জলপাইগুড়িতে এই কর্মসূচি জানিয়েছেন রাজ্য কোঅর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী।
কোচবিহারে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় সাগর পর্যন্ত পথ হাঁটবেন সরকারি কর্মচারীরা। গুপ্ত চৌধুরী বলেছেন, ‘‘সীমান্ত থেকে সাগর ‘অধিকার যাত্রা’ শুরু হবে ১৭ ফেব্রুয়ারি। ১১ মার্চ নবান্নের সামনে আছড়ে পড়বে জনসমাবেশ।’’
কেবল ডিএ নয়, স্বচ্ছভাবে নতুন নিয়োগের দাবিতেও সরব রাজ্যের কর্মচারী, শিক্ষকদের আন্দোলন।
জলপাইগুড়িতে চলছে ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভে অ্যান্ড ড্রয়িং এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্মেলন। জলপাইগুড়িতে মিছিল করেছেন কর্মচারীরা। সম্মেলনের যোগ দিয়েছেন কোঅর্ডিনেশন কমিটির নেতা গুপ্ত চৌধুরী।
প্রতিবাদে শামিল হলেই কর্মচারীদের বদলি করে চলেছে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। কর্মচার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে বদলি করা হচ্ছে। গুপ্ত চৌধুরী বলেছেন, ‘‘রাজ্যের তৃণমূল সরকার কর্মাচরীদের ওপর আক্রমণ করছে শ্রেণি দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই। কিন্তু বদলি বা শাস্তির হুমকি দিয়ে আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। অধিকারের দাবিতে চলছে লড়াই।’’
তিনি মনে করিয়েছেন যে রাজ্যে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারই কর্মচারীদের ধর্মঘটের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। সেই মতো সার্ভিস রুল বা কাজের বিধিও তৈরি হয়েছিল।
কোঅর্ডিনেশন কমিটি জানিয়েছে কারও দয়া দাক্ষিণ্যের ওপর ভরসা করে আন্দোলন চলছে না। কেবল কর্মচারীরা নিজেদের স্বার্থেই লড়াই করছেন না। লড়াই চলছে সমাজের স্বার্থেও।
গুপ্ত চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আমাদের রাজ্যে রাজনীতিতে এমন ধর্মীয় বাতাবরণ ছিল না। মানুষকে সচেতন করার কাজও করবে ‘অধিকার যাত্রা’।
রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রের সরকারের নীতিতে ক্ষোভ কেন তারও ব্যাখ্যা দিচ্ছে কর্মচারী আন্দোলন। কর্মচারীদের বক্তব্য, রাজ্যে শূন্যপদ প্রায় ৬ লক্ষ। কাজ চালানোর জন্য সমানে অস্থায়ী এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ চলছে। কেন্দ্র এবং রাজ্য, দুই সরকারই একই নীতিতে চলছে। নামমাত্র পারিশ্রমিক দিয়ে মারাত্মক শোষণ করা হচ্ছে এই কর্মচারীদের।
গুপ্ত চৌধুরী বলছেন, ‘‘এমন নীতির প্রভাব পড়ছে সরকার পরিচালনায়। মানুষ সরকারের থেকে পরিষেবা পাচ্ছেন না। সেই জন্য এখন ‘দুয়ারে সরকার’ বলা হচ্ছে। দুই সরকারই আসলে চায় আমলানির্ভর প্রশাসন।’’
কর্মাচরী আন্দোলনের বক্তব্য, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে চলতে চাইছে বলেই আমলাদের বেতন বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। মন্ত্রীরা নিজেদের বেতন বাড়িয়ে নিচ্ছেন। আর স্থায়ী বা অস্থায়ী কর্মচারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে।
গুপ্ত চৌধুরী বলছেন, ‘‘শ্রমজীবীর স্বার্থকেই বরাবর বয়ে নিয়ে গিয়েছে কোঅর্ডিনেশন কমিটি। সেই লক্ষ্যেই হবে ‘অধিকার যাত্রা’।’’
Comments :0