ড্রিলিং যন্ত্রের কাজ চলছে, তবে অত্যন্ত ধীরগতিতে। সতর্কতার জন্যই এই ব্যবস্থা, বলছেন উদ্ধারকারীরা। উত্তরকাশী সুড়ঙ্গে উদ্ধার অভিযান চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিকের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। অ্যাম্বুলেন্সগুলি বর্তমানে সুড়ঙ্গের বাইরে অপেক্ষা করছে এবং দিল্লি থেকে সাত জন বিশেষজ্ঞের একটি দল অভিযানের গতি বাড়াতে সাহায্য করার জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
এনডিআরএফ-এর ডিজি অতুল কারওয়াল জানিয়েছেন, প্রথম ৬ মিটার পাইপ ইতিমধ্যে ভেতরে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং একই দৈর্ঘের পরবর্তী পাইপ খননের জন্য ওয়েল্ডিং কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকান-অগার ড্রিলিং মেশিন, যা ঠান্ডা রাখার জন্য সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল, আবার কাজ শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উদ্ধারকারী দলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ১৮ ঘন্টায় নতুন করে ২ মিটার ধস খোঁড়া হয়েছে। আরও ১০ মিটার খুঁড়তে হবে। বুধবার রাতে খননযন্ত্রের মুখে পড়ে আবর্জনার ভেতরে থাকা লোহার জালিকা। যন্ত্র আটকে যায়। ধাতব বস্তু থাকায় ব্লেড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খনন বন্ধ করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খুব ধীরে চালানো হচ্ছে যন্ত্র। সিল্কিওয়ারায় সুড়ঙ্গ মুখ থেকে ২০০ মিটার দূরত্বে গত ১২ নভেম্বর ভোরে নেমেছিল ধস। আটকে যায় প্রায় ৬০ মিটার রাস্তা। তার পিছনেই আটকে রয়েছেন ৪১ শ্রমিক। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা এনডিআরএফ জানাচ্ছে, কম্পনে সুড়ঙ্গের মধ্যে যাতে নতুন করে ধস না নামে তা খেয়ালে রাখতে হচ্ছে। আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করতে সুড়ঙ্গের মধ্যে রয়েছেন বহু শ্রমিক। তাঁরা সকাল থেকে রাত পরিশ্রম করছেন উদ্ধারের কাজে। তাঁদের নিরাপত্তাও বিবেচনায় রাখা দরকার।
পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিশেষজ্ঞরা জটিল উদ্ধারকাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন। সিল্কিওয়ারায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধসের সঙ্গে ভেঙে পড়েছিল নির্মীয়মান সুড়ঙ্গের ছাদ থেকে ধাতব বস্ত, রয়েছে কংক্রিটের চাঙড়। সতর্ক থাকতে হচ্ছে ড্রিলিং যন্ত্র যাতে আটকে না যায়। সে কারণেই অত্যন্ত ধীরে চালানো হচ্ছে যন্ত্র।
গত ১২ দিনে একাধিক বার ড্রিলিং যন্ত্র সমস্যার মুখে পড়েছে। তার জন্য উদ্ধার কাজ একাধিক দফায় বন্ধও রাখতে হয়েছে। হিমালয়ের বুক চিরে উত্তরাখণ্ডে গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী, কেদারনাথ এবং বদ্রিনাথ দ্রুত গতিশীল পথে জুড়ে নেওয়ার ‘চারধাম’ প্রকল্প কেন্দ্রের। পরিবেশ এবং ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা ভঙ্গুর হিমালয়ের মধ্যে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার পরিকল্পনায় আপত্তি জানিয়েছিলেন। ভারী পরিকাঠামোর কাজে পরিবেশজনিত বাস্তবতা হিসেবে না রাখায় বিপর্যয়ের ঘটনা নিয়মিত ঘটছে হিমালয়ের পার্বত্য রাজ্যগুলিতে। তবে কেন্দ্র বিশদ চর্চার রাস্তাতেই হাঁটেনি। বিভিন্ন বিপর্যয়েই দেখা গিয়েছে, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বা সড়কের, বিপন্ন হচ্ছেন সবার আগে শ্রমিকরা। আটকে থাকা ৪১ জনের বেশিরভাগই উত্তরাখণ্ডের বাইরে রাজ্যগুলির। রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের তিন শ্রমিকও।
Comments :0