Yousuf Tarigami

৩৭০ ধারা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশনের বিবেচনা চলছে বললেন তারিগামি

জাতীয়

 

সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে বৈধতা দিয়ে ১১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্বিবেচনার আপিল জানানোর কথা বিবেচনা করা হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন সিপিআই (এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি। এদিন জম্মুতে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, যাঁরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন তাদের মধ্যে রিভিউ পিটিশন বা পুনর্বিবেচনার আপিল জানানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। আদালতের রায় বা নির্দেশের পর থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সেই বেঞ্চেই রিভিউ পিটিশন দাখিল করা যায়। 

তারিগামি এদিন বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টই সর্বোচ্চ। কিন্তু নাগরিক হিসেবে আমারও মতামত থাকতে পারে, যা সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্টেরই নির্দেশিকা আছে। আমাদের মত হলো, জম্মু কাশ্মীর এবং লাদাখের মানুষ ন্যায়বিচার পাননি। সেই কারণে যে সব আবেদনকারীরা এই মামলায় আগে সুপ্রিম কোর্টে গেছিলেন, তারা বিবেচনা করছেন পথ খুঁজে দেখার, যাতে ন্যায়বিচার মেলে। তারিগামি বলেন, ৩৭০ ধারা নিয়ে বিভ্রান্তিকর ভাষ্য ছড়ানো হচ্ছে। ৩৭০ ধারা সংশোধনের একটি দীর্ঘ তালিকা আছে, যার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় আইনকে জম্মু-কাশ্মীরে লাগু করা হয়েছে। ওইভাবেই ২০১৭ সালে জিএসটি জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় পাশ করানো সাম্প্রতিক সময়ের একটি উদাহরণ। ৩৭০ ধারা যখন গ্রহণ করা হয়েছিল, তখন ছিল না এমন ৪২টি সাংবিধানিক নির্দেশকে প্রসারিত করা হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে। একইভাবে ১৯৮৬ সালের জুলাই মাস থেকে ৩৭০ ধারার অপব্যবহার প্রসারিত করা হয়েছে রাজ্যের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার জন্য।  

সংবিধানের ৩৭০ ধারা মুসলিম সংখ্যাধিক্যের অঞ্চলের সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের মধ্যে সেতু ছিল। তিনি বলেন, যারা ইতিহাসের বিকৃতি ঘটাচ্ছেন, তাদের বলছি সবথেকে শান্ত এলাকায় সন্ত্রাসবাদ কুৎসিত চেহারায় মাথা চাড়া দিয়েছিল যখন দিল্লি থেকে সরকার তৈরি করে দেওয়া হত এবং এখানের মানুষের বিশ্বাসকে ভাঙা হতো। পুঞ্চে সেনা জওয়ানদের উপরে সন্ত্রাসবাদী হামলা-হত্যা এবং সেনা হেপাজতে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তারিগামি বলেন, আইন ভেঙে সন্ত্রাসবাদকে পরাস্ত করা যাবে না। মানুষকে কিনারায় ঠেলে দেবেন না। ব্যবস্থার প্রতি যাতে তাদের আস্থা থাকে সেইরকম পরিবেশ তৈরি করুন। বেকার যুবদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করুন। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষও ভারতের অংশ। তাদের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া দেশকেই দুর্বল করবে। তারিগামি বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু উন্নত ভবিষ্যতের জন্য আমরা একসঙ্গে চলতে পারি। এটা তখনই সম্ভব হবে যখন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামো মজবুত হবে, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো প্রাণবন্ত থাকবে। তিনি মানুষের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, কায়েমি স্বার্থ তাদের মধ্যে বিভাজন করতে চাইবে এবং তাদের একে অপরের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দিতে চাইবে, সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে হবে।  

Comments :0

Login to leave a comment