BOWBAZAR HOUSE COLLAPSE

বাড়ি ভাঙতে গিয়ে বউবাজারে ভাঙল পাশের বাড়ি

কলকাতা

মঙ্গলবার সকালে বউবাজারের রামকানাই অধিকারী লেনে বাড়ির ভাঙার কাজ চলাকালীন পাশের একটি পুরানো বাড়ির দেওয়াল সহ ঘরের একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে।

 গার্ডেনরিচে বাড়ি ভেঙে পড়ার পর একের পর বহুতলের বিভিন্ন অংশ ভেঙে বিপত্তির ঘটনা সামনে আসছে। বিরাটি, চেতলার পর তিলজলার বহুতলে দুর্ঘটনার পর মঙ্গলবার ফের বউবাজারে ভেঙে পড়ল পুরানো বাড়ির একাংশ। রামকানাই অধিকারী লেনে বাড়ির ভাঙার কাজ চলাকালীন এদিন সকাল আটটা নাগাদ পাশের একটি পুরানো বাড়ির দেওয়াল সহ ঘরের একাংশ  হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিয়ম না মেনে পাশের বাড়ির প্রোমোটারি করার জন্যই এমন ভয়ঙ্কর সমস্যায় পড়তে হলো। গার্ডেনরিচের ঘটনার ১৫ দিনের মাথায় নতুন বিপদের মধ্যে পড়ে গেলেন বউবাজারের রামকানাই অধিকারী লেনের বাসিন্দারা।
মুচিপাড়া থানা সূত্রে জানা গেছে, ৭ নম্বর রামকানাই অধিকারী লেনের ভাঙচুর করার জেরেই পাশের ৬/১এ রামকানাই অধিকারী লেনের দোতলার একটা অংশ ভেঙে পড়ে। এই ঘটনার জেরে আশেপাশের বেশ কিছু বাড়ির দেওয়ালে ফাটলও দেখা দিয়েছে। আর তার জেরেই   আতঙ্কিত হয়ে বহু মানুষ বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন। প্রোমোটার নিয়ম না মেনে কাজ করছিল বলেই এই বিপত্তি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই ঘটনাকে ঘিরে গোটা এলাকাজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় প্রশাসন সূত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মিললেও কাজের কাজ এদিন রাত পর্যন্ত হয়নি। 
এই ক’দিন আগে দমদমের কাছে বিরাটির একটি বাড়ির কার্নিস ভেঙে মারা যান পাশের বাড়ির এক গৃহবধূ। গার্ডেনরিচে বহুতলের ভেঙে পড়ে মারা গেছেন ১২ জন। তপসিয়ায় বেআইনি বাড়ির অংশ ভেঙে জখম হয়েছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। আর তার পরে আবার উত্তর কলকাতার বউবাজারে বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ল। এদিনের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি, এই যা রক্ষা। গার্ডেনরিচকাণ্ডে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বাড়িটির রাজমিস্ত্রিকে। তার আগে প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিম এবং জমির মালিক মহম্মদ সরফরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিরাটির ঘটনাতেও গ্রেপ্তারি হয়েছে, কিন্তু তিলজলার প্রোমোটারের সন্ধান মেলেনি।
বউবাজারের ঘটনায় মুচিপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দিনভর স্থানীয় মানুষের ক্ষোভকে প্রশমিত করার চেষ্টা চালান। পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়িটি ভেঙে পড়লেও কেউ আহত বা নিহত হননি। তবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে পড়া বাড়িটি বহু পুরানো। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য দাবি করেছেন  যে বাড়িটি  ভেঙে পড়েছে তা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হতো। তাই বাড়িটি ভেঙে পড়ার অবস্থায় ছিল না। বাড়ির পাশে নিয়ম না মেনে বাড়ি ভাঙার কাজ করা হয়েছে। নেওয়া হয়নি সামান্যতম ব্যবস্থা। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানিয়েছিলেন, ‘বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে যুক্তদের শিক্ষা দিতে হবে। যাতে আগামীতে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ হয়। আদালত চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না। বিচার না দিলে অন্যায় করা হবে।’

Comments :0

Login to leave a comment