ছাত্রছাত্রী উপচে পড়ছে সুনীতি বালা সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এই স্কুলটি হাইস্কুল সংযুক্ত। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও প্রচুর। তাই এই স্কুলেরই দ্বিতীয় ক্যাম্পাস খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জন্য বাছা হয়েছে করলা নদীর অন্য দিকে শিশু মহল প্রাথমিক বিদ্যালয়কে। যেখানে ছাত্র কম।
এই সিদ্ধান্তকে অবৈজ্ঞানিক আখ্যা দিয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক ও জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দিল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ। সংগঠন বলছে, জলপাইগুড়ির শতাধিক স্কুল ছাত্রছাত্রীর অভাবে ধুঁকছে। অথচ, হাইস্কুল সংযুক্ত ২০টি প্রাথমিক স্কুলে উপচে পড়ছে ভিড়। সুষম ছাত্র ভর্তির নীতি না নিয়ে এবার দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের সিদ্ধান্ত। বহু সরকারি স্কুল উঠে যাবে এমন চললে।
এবিপিটিএ জানাচ্ছে, কোনও প্রাথমিক স্কুলে ৩০০-র বেশি ছাত্রছাত্রী ভর্তি না করার নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছিল এর আগে। কিন্তু সেই নির্দেশিকা কার্যকর হচ্ছে না। হাইস্কুল সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপচে পড়ছে ভিড়। সুপারিশেও ভর্তি করানো হচ্ছে শিশুদের। এবিপিটিএ’র স্মারকলিপিতে দাবি, অবিলম্বে সরকারি নির্দেশিকা মেনে বড় স্কুলগুলোতে নির্দিষ্ট সংখ্যক ছাত্রছাত্রী ভর্তি করতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিক শ্রেণীতে প্রয়োজনে ১০০ এর মধ্যে ভর্তি সীমাবদ্ধ করতে হবে। সুপারিশের ভিত্তিতে ভর্তি করা যাবে না প্রয়োজনে লটারি করতে হবে।
জানা গিয়েছে, সুনীতি বালা সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৪০০ প্রায়। প্রশাসনের ব্যাখ্যা, ৩৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা দিয়ে ওই স্কুল চালানো যাচ্ছে না। সে জন্য দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দেন এবিপিটিএ’র জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝা, সংগঠনের অসিত রক্ষিত, রাজীব ব্যানার্জি, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, অসীম কর প্রমুখ।
শিক্ষকনেতারা বলেছেন, প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস পশ্চিমবঙ্গে কোথাও নেই, এটি অবৈজ্ঞানিক। বরং প্রয়োজনে অতিরিক্ত কিছু শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করা উচিত। এভাবে স্কুল ভেঙে নতুন ক্যাম্পাসের অর্থ, সেখানেই আরও বেশি ছাত্র-ছাত্রীকে ভর্তি করানো হবে। অথচ শহর এবং জেলার বহু প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীর অভাবে ধুঁকছে। এই সিদ্ধান্ত সুস্থ শিক্ষাব্যবস্থার পরিপন্থী।
এবিপিটিএ’র দাবি,
সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে ‘ক্লাস্টার সিস্টেম’ দ্রুত চালু করতে হবে। নচেৎ একের পর এক স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে।
স্কুলগুলিতে বন্ধ সরকারের ‘কম্পোজিট গ্রান্ট’। স্কুল পরিচালনার প্রতিদিনের খরচা মিল এই অনুদান থেকে। শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই স্কুলগুলিতে এই অনুদান পৌঁছে দেওয়ার দাবি তুলেছেন শিক্ষকরা।
জেলা জুড়ে বেসরকারি বিদ্যালয়ের রমরমা। অন্যদিকে ছাত্র-ছাত্রীর অভাবে ধুঁকছে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা। বাড়ছে ড্রপ আউটের সংখ্যা। তার ওপর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের ধারণা প্রয়োগ হলে আরও সরকারি স্কুল উঠে যাবে বলে আশঙ্কা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। ফলে বেসরকারি স্কুলের ওপর নির্ভরতা আরও বাড়বে, বলছে এবিপিটিএ।
Second Campus
প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের সিদ্ধান্তে শিক্ষকদের ক্ষোভ জলপাইগুড়িতে
×
Comments :0