ভোটের দিন রাতে নির্বাচন কমিশন ভোটদানের প্রাথমিক তথ্য দেয়। ভোটদানের চূড়ান্ত তথ্য এক বা দু’দিন পর। এবার প্রথম দুই পর্বে ভোটদানের চূড়ান্ত তথ্য দিতে অস্বাভাবিক দেরিও করেছে কমিশন। প্রথম চার দফায় প্রাথমিক তথ্য এবং চূড়ান্ত তথ্যের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৭ লক্ষ ভোটের ফারাক থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
প্রতিবার চূড়ান্ত ভোটদানের হারের পাশাপাশি প্রতিটি লোকসভায় কতজন ভোট দিয়েছেন সেই সংখ্যাও বের করে দেয় কমিশন। এবার লোকসভা ভিত্তিক সেই সংখ্যা দেওয়া হচ্ছে না। সংখ্যা না দেওয়া এবং প্রথম দুই পর্বে চূড়ান্ত তথ্য প্রকাশে দেরি নিয়ে মামলাও দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। প্রথম দুই পর্বে ভোটদানের চূড়ান্ত হার প্রাথমিক তথ্যের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি কেন, তার ব্যাখ্যা কমিশনের থেকে তলবও করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
সব মিলিয়ে সংখ্যার নিরিখে প্রাথমিক এবং চূড়ান্ত তথ্যের ফারাক সঠিকভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ সেই সংখ্যা কমিশন, এই প্রথম, প্রকাশ করছে না। তবে ভোটার তালিকায় মোট নামের নিরিখে অনুমান করার চেষ্টা হচ্ছে। তাতেই ১ কোটি ৭ লক্ষ ভোটের ফারাক থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এখনও পর্যন্ত দেশে প্রথম চার পর্বে লোকসভার ৩৭৯ আসনে ভোট নেওয়া হয়েছে। প্রতি আসনে, সেক্ষেত্রে, গড়ে ২৮ হাজার ভোটের ফারাক হচ্ছে। বহু আসনেই এই সংখ্যার ভোটে জয় পরাজয়ের নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
রাজ্যভিত্তিক ফারাকের হিসেবে দেখা যাচ্ছে অন্ধ্রে ৪.২ শতাংশ এবং মহারাষ্ট্রে ২.৪ শতাংশ ভোটদান বেড়েছে চূড়ান্ত তথ্যে। কেরালায় ৪.১ শতাংশ, আসামে ৪.২ শতাংশ, পশ্চিমবঙ্গে ২.৪ শতাংশ হেরফের হয়েছে মতদানের হারে।
প্রথম দফায় ভোটের ১১ দিন পর এবং দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ দফায় ভোটের ৪দিন পর চূড়ান্ত হার প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু কতজন ভোট দিলেন জানানো হয়নি। ভোটদানের নির্দিষ্ট সংখ্যার দাবিতে নির্বাচন কমিশনে চিঠিও দিয়েছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে তথ্যের হেরফেরে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
সঠিক সংখ্যা বের না করে কমিশন বলেছে রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থীরা তাদের বুথ স্তর থেকে এই তথ্য বের করে নিতে পারবেন। কিন্তু কোনও দল যে সংখ্যা হিসেব কষে বের করল কমিশন তাকে মানবে কিনা বোঝা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাড়তি কিছু ভোট হিসেবে দেখিয়ে দিয়ে কোনও দলকে সুবিধা দেওয়ার আশঙ্কা থাকছে। তার ওপর চূড়ান্ত ভোটের হার বেড়েছে কর্ণাটক, মহরাষ্ট্র, অন্ধ্র প্রদেশে। কিন্তু হিন্দি বলয়ে হেরফের অন্যান্য বারের মতোই। রাজ্যভিত্তিক এই ফারাক কেন, তার ব্যাখ্যাও কমিশন দেয়নি।
Voter Turnout Numbers
ভোটদানের সংখ্যায় হেরফের ১ কোটি ছাড়াতে পারে
×
Comments :0