অনির্বাণ দে, বহরমপুর,
মুর্শিদাবাদ জেলায় ফের সামনে এল মা ও শিশুর স্বাস্থ্যে চরম সংকটের ছবি। বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শেষ ২৪ঘন্টায় মুর্শিদাবাদ জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১০ শিশুর। তার মধ্যে ৯ সদ্যোজাত।
এই শিশুদের মধ্যে ৩ শিশুর জন্মও হয়েছিল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালেই। বাকি শিশুদের মধ্যে একজন করে শিশু লালবাগ সাবডিভিশন হাসপাতাল, ডোমকল সাবডিভিশন হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এক শিশুকে রেফার করা হয়েছিল বহরমপুরেরই একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে। চার শিশুর জন্ম হাসপাতালের বাইরে হয়েছিল। এর মধ্যে ৯ শিশুই সদ্যজাত , এক শিশুর বয়স প্রায় এক বছর।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯শিশুর মধ্যে প্রতিটি শিশুরই ওজন ছিল কম। হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ১০শিশুর মধ্যে ৭ শিশুর অবস্থা ছিল সংকটজনক। সংকটজনক অবস্থাতেই তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক শিশুর হৃদযন্ত্রে সমস্যা ছিল। এবং এক শিশু অপুষ্টির শিকার ছিল। এসএনসিইউ -ইউনিটে ৭টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে। বর্তমানে এসএনসিইউ ইউনিটে ১২৭টি বেড, সেখানে ভর্তি রয়েছে ২৫০ শিশু।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, অপুষ্টির কারণে শিশুদের জন্মকালীন ওজন অত্যন্ত কম হওয়ায় সংক্রমণ হয়েছে। একটি শিশুর মৃত্যু জন্মকালীন অত্যন্ত কম ওজনের কারণেই বলা হয়েছে। এছাড়া, শ্বাসকষ্টজনিত কারণে ২জন, হৃদযন্ত্রের গোলযোগে ১জন, সেপটিসেমিয়ার কারণে ২জন, নিউরো ডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডারে ১জন এবং আঘাতজনিত কারণে ১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ডাঃ অমিত দান বলেছেন, “বেশিরভাগ বাচ্চারই জন্মের পর ওজন ছিল ৪৫০-৬০০ গ্রাম। ওজন দেড় কেজির হলে ভালো হয়। ফলে ইনফেকশান হবে না। নইলে এর কম হলে সেই বাচ্চাকে বাঁচানোর সমস্যা তৈরি হয়”।
তাঁর আরও দাবি, “অসুস্থ শিশুদের নিয়ে যাঁরা জঙ্গিপুর, ডোমকল থেকে আসছেন, তাঁদের আসতে আসতেই ৩-৪ ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। এবং এই সময়টাকে আমরা গোল্ডেন আওয়ার বলি। এই সময়টা যদি তারা চিকিৎসা পেতো, হয়ত তাহলে কিছুটা উন্নতি হতো। এই সুবর্ণ সুযোগটাই আমরা পাচ্ছি না। ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি”। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে মুর্শিদাবাদ জেলায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বেহাল দশাই।
Comments :0