আতিক আহমেদের খুন ঘিরে রহস্য সবচেয়ে পুলিশের ভূমিকায়। নানা স্তরে তা নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে। বড় প্রশ্ন রয়েছে আতিক আহমেদ এবং ভাই আশরফের ‘মেডিক্যাল চেক আপ’ নিয়ে।
বিভিন্ন অংশই প্রশ্ন ছুঁড়ছেন ‘নিয়মমাফিক’ মেডিক্যাল চেক আপ অত রাতে করাতে নিয়ে কেন গিয়েছিল পুলিশ। বহু অপরাধে অভিযুক্ত আতিক এবং আশরফ অসুস্থ হয়ে থাকলে অ্যাম্বুল্যান্সই বা ছিল না কেন? বরং এলাহাবাদ বা নাম বদলে প্রয়াগরাজের কলভিন হাসপাতালের গেট থেকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তারই মাঝে সংবাদমাধ্যম ঘিরে ধরে। ‘সাংবাদিক সেজে’ তিন আততায়ী পরপর গুলি চালিয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে হত্যা করে দুই অভিযুক্তকে।
আতিক আহমেদ উত্তর প্রদেশের রাজনীতিতে দুষ্কৃতী যোগের অন্যতম নাম। ২০০৪’এ সমাজবাদী পার্টির সাংসদ নির্বাচিত হলেও তাঁকে কয়েক বছর পর বহিষ্কার করতে হয়। তারপরের দু’টি নির্বাচনেও প্রার্থী হন আতিক। রয়েছে গুরুতর অপরাধের অভিযোগে একশোটির বেশি এফআইআর। এমন অপরাধীর বিচার থেকে সবিস্তারে অপরাধ চক্র জানার সুযোগ থাকে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকেই। সেখানে পুলিশ হেপাজতে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যা’ কেন, উঠেছে সে প্রশ্নও।
২৪ ফেব্রুয়ারি দিনের বেলা রাস্তায় খুন হয়ে যান আইনজীবী উমেশ পাল। ২০০৫’র বিএসপি বিধায়ক রাজু পাল হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন উমেশ। রাজু পাল হত্যা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আতিক আহমেদ। উমেশ পাল খুনের পর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অপরাধীদের ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
উমেশ পাল হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত আতিকের এক ছেলে আসাদ পলাতক ছিল। ১৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার, এক সঙ্গী সহ আসাদ নিহত হন পুলিশের গুলিতে। পুলিশ জানিয়েছিল ‘এনকাউন্টার’, অর্থাৎ গুলি বিনিময়।
১৩ এপ্রিল এলাহাবাদের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আতিফ এবং আশরফের ১৭ তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। অভিজ্ঞরা বলছেন, নিয়ম হলো আদালতে তোলার আগে এবং হেপাজতে নেওয়ার সময় অভিযুক্তদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হয়। কিন্তু মাঝে, ১৫ এপ্রিল মানে শনিবার রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ল কেন?
কোনও বন্দি আইন অনুযায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা জানালে পরীক্ষা হতে পারে। কিন্তু আতিক আহমেদের আইনজীবী বিজয় মিশ্র সংবাদমাধ্যমে বলেছেন যে এমন কোনও সমস্যা আতিক জানাননি। তা’হলে কেন রাত করে নেওয়া হলো, উঠছে প্রশ্ন। আরও প্রশ্ন হলো, দুই ভাইয়েরই কী একসঙ্গে শরীর খারাপ লাগছিল? স্বাস্থ্য পরীক্ষাই যদি হয় তা’হলে হাঁটানোই বা হলো কেন, অ্যাম্বুল্যান্সে সোজা হাসপাতালে না নিয়ে?
উত্তর প্রদেশ পুলিশের থেকে ব্যাখ্যা চাইছে বিভিন্ন অংশ।
Comments :0