দক্ষিণেশ্বর রেল বস্তি উচ্ছেদ করতে এসে বস্তির বাসিন্দাদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে পড়ে ফিরে যেতে বাধ্য হলেন আরপিএফ এবং রেল আধিকারিকরা। এই নিয়ে পরপর সাতবার এখানে একজোটে বস্তি উচ্ছেদ প্রতিরোধ করলেন শ্রমজীবী বস্তিবাসীরা।
উচ্ছেদ অভিযানে খবর পেয়ে শনিবার সকাল থেকেই রেলবস্তির বিভিন্ন গেট আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বাসিন্দারা। কিছুক্ষণ পরে গেট খুলে দিলে আরপিএফ ভিতরে প্রবেশ করে। ছেঁচাবেড়ার একটি ঘরের টালিও ভাঙতে শুরু করে বাহিনী। সঙ্গেসঙ্গেই বস্তিবাসীরা তীব্র বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিক্ষোভের মুখে পড়ে ফিরে যাতে বাধ্য হয় আরপিএফ এবং রেলের আধিকারিকরা।
পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতি বলেছে, কর্পোরেটের স্বার্থে রেলের জমি দেওয়া হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে বারবার উচ্ছেদের চেষ্টা হচ্ছে দক্ষিণেশ্বরের রেলবস্তিতে। রেলের পরিষেবা বা পরিকাঠামোর জন্য এই জমি ব্যবহার হবে না। পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক ঝন্টু মজুমদার বলেন, ‘‘পরপর সাতবার ফিরে যাওয়ায় আরও জোরালো হলো পুনর্বাসনের দাবি।’’
প্রায় ৪০০ পরিবারের হাজার দু’য়েক মানুষ থাকেন এই রেলবস্তিতে। কেউ কেউ পঞ্চাশ ষাট বছর ধরে রয়েছেন। এর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষার মুখে উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়। বস্তিবাসিদের দাবি, এই জমিতেই তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। দক্ষিণেশ্বর স্টেশন ও মন্দিরের পাশে অবস্থিত রেলের বিস্তীর্ণ অব্যবহৃত জমিতে মহিলা শিশু বৃদ্ধ মিলিয়ে দু’হাজারের বেশি মানুষের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু রয়েছে। জরুরি পরিষেবা সহ অসংগঠিত ক্ষেত্রর একাধিক পেশায় যুক্ত থেকে কোনোমতে রোজগার করে বেঁচে রয়েছেন বস্তিবাসীরা। জীবনজীবিকা চালিয়ে বেঁচে থাকার জন্য এখানেই তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া জরুরি বলে দাবি তাঁদের।
ঝন্টু মজুমদার বলেন, ‘‘সাতবার উচ্ছেদ করতে এসে ব্যর্থতার ফলে দক্ষিণেশ্বরের রেলবস্তির বাসিন্দাদের বাসস্থানের অধিকার আরও বেশি জোরালো হয়ে উঠেছে। উপযুক্ত পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ চলবে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে জমি নেওয়ার চুক্তি অনুযায়ী রেল পরিষেবা ও তার কাঠামোগত কারণ ছাড়া রেল কর্তৃপক্ষ এই জমি ব্যবহার করতে পারে না। কর্পোরেটদের বাণিজ্যিক স্বার্থে তাদের হাতে রেলের জমি দেওয়া চলবে না।’’
Comments :0