AGRICULTURAL WORKERS RALLY

রাজ্যজুড়ে ফর্ম ভরবেন খেতমজুররা, লড়াই হবে আদালতেও

রাজ্য কলকাতা

AGRICULTURAL WORKERS RALLY

অনিন্দ্য হাজরা ও সৌরভ গোস্বামী

দিল্লিতে তৃণমূল আর বিজেপি লোকদেখানো কুস্তি করছে। আবাস যোজনা, একশো দিনের টাকা চুরি করছে তৃণমূল। আর দিল্লির বিজেপি সরকার শাস্তি দিচ্ছে খেতমজুর আর গরিব মানুষকে। পথে নেমেই এই অন্যায় প্রতিরোধ করতে হবে। হবে নবান্ন অভিযানও। 

সোমবার এই মর্মে ডাক দিয়েছে ধর্মতলার খেতমজুর সমাবেশ। সবচেয়ে কঠিন অবস্থায় রয়েছেন গ্রামের এই সর্বহারা অংশ। প্রতিরোধে নেমে দাবি আদায়ের আহ্বান জানিয়েছেন সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি এ বিজয়রাঘবন, সাধারণ সম্পাদক বি ভেঙ্কট, রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ, সম্পাদক নিরাপদ সর্দার। সংগঠনের নেত্রী বন্যা টুডু। বক্তব্য রেখেছেন  সর্বভারতীয় সহসভাপতি অমিয় পাত্র, আইনজীবী এবং রাজ্যের সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য। 

নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন যে এবার সারা রাজ্যে একশো দিনের কাজের আইন অনুযায়ী ‘৪-ক’ ফর্ম ভরার প্রচার হবে। ফর্ম জমা দেওয়া হবে পঞ্চায়েতে। আইন অনুযায়ী দেশের সরকার কাজ দিতে বাধ্য। কাজ না পেলে আদালতেও নিয়ে যাওয়া হবে এই লড়াই।  

বিজয়রাঘবন বলেছেন, ‘‘রাজ্যের কোনা কোনা থেকে দরিদ্রতম মানুষ আজ এই সমাবেশে এসেছেন। দিল্লিতে মোদি এখানে দিদির রাজত্ব। দুই রাজত্বই গরিব বিরোধী।’’ ভেঙ্কট বলেছেন, ‘‘রাজ্যের ১৬ লক্ষ খেতমজুরের লড়াই পাশে আছে গোটা দেশ।’’

অমিয় পাত্র বলেছেন, ‘‘বিজেপি-তৃণমূল কুস্তি করছে। তাই ১০০ দিনের টাকা বন্ধ। তৃণমূল চুরি করল। শাস্তি পেল জব কার্ড থাকা কৃষিজীবী। ১০০ দিনের কাজের আইন তৈরিতে তৃণমূল বিজেপি’র কোনও ভূমিকা নেইঅবদান নেই। 

তিনি বলেন, ‘‘১০০ দিনের টাকা আদায়ে ২ অক্টোবর দিল্লি যাবে তৃণমূলের বাহিনী। বিজেপি বকেয়া মেটাবে না। আমরা এখানে বকেয়ার দাবিতে আজ এখানে এসেছি। এরপর নবান্নে যাবো। হাইকোর্টেও যাব। কেন্দ্র আইন ভাঙছে। মানুষকে কাজ দিতেই হবে। ওরা তো অভিষেককে বাঁচাতে বারবার আদালতে দৌড়চ্ছে।’’ 

আবাস দুর্নীতি প্রসঙ্গে পাত্র বলেন, ‘‘এ রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ পাকা বাড়ি পেলেন না তৃণমূলের দুর্নীতির জন্য। পাকা ছাদের বাড়ির মালিকদের নাম উঠল তালিকায়। আর ঝুপড়িতে থাকা মানুষের নাম তালিকায় উঠল না। কেন্দ্র সুযোগ নিল। বলল। আমরা এই তালিকায় টাকা পাঠাব না। এর ফল ভোগ করলেন ১১ লক্ষ গরিব মানুষ।’’ 

পাত্র বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট সরকার বুঝেছিলগ্রামের মানুষের আয় বাড়াতে হবে। আর এখন তৃণমূল বলছে ব্যথা হলে মলম লাগিয়ে নাও। সমাধান দেব না। বামফ্রন্ট সরকার ৩০ লক্ষ মানুষকে জমি দিয়েছিল। এখন সেই জমি লুট হচ্ছে। স্থায়ী কাজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। টাকা দিয়ে ভোট কেনা হচ্ছে।’’ 

তাঁর আহ্বান, ‘‘মানুষকে রাস্তায় নামতে হবে। কাতারে কাতারে রাস্তায় নামুন। পুলিশের দালালি বন্ধ হবে। একমাত্র এ ভাবেই দিন বদলানো সম্ভব।’’ 

আইনজীবী এবং সিপিআই(এম) সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন যে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেকে ঈশ্বরের দূত বলে দেখাতে চাইছেন। রাজা-প্রজার সম্পর্ক ফিরিয়ে আনতে চাইছে। এই প্রসঙ্গেই ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ইংরেজকে তাড়ানো হয়েছিল গ্রামের গরিব মানুষের অভ্যুত্থানে। শ্রমিক কৃষকের আন্দোলনে। বাবুদের লোক দেখানো আন্দোলনে নয়। সেই মানুষ ঠিক করলেনআমরা ইংরেজদের তাড়িয়েছিআমরা দেশের শাসক ঠিক করব। আর কোনও ‘ঈশ্বর প্রেরিত’ রাজা দেশ চালাবে না। আজ আবার সেই ‘ভগবানের বরপুত্র’ আমদানি করার চেষ্টা হচ্ছে। এর প্রতিরোধ করতে হবে।’’

ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজে ‘৪-ক’ ফরম ভরতে হবে। কাজ না দিলে আদালতেও লড়াই হবে।’’

Comments :0

Login to leave a comment