RALLY MALDAHA

মালদহে খেতমজুর সমাবেশে আন্দোলনেই জোর মিশ্রের

জেলা

বৃহস্পতিবার মালদহ শহরে গণশক্তি ও জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের জন্য অর্থ তুলে দিচ্ছেন শিখা চক্রবর্তী। মঞ্চে নেতৃবৃন্দ।

উৎপল মজুমদার, মালদহ

রাত থেকে শুরু বৃষ্টি চলেছে সারাদিন। বৃষ্টির দমক বাড়ল ঠিক সমাবেশের সময়ই। তবু মালদহ শহরে হয়েছে সারা ভারত খেতমজুরি ইউনিয়নের ডাকে সমাবেশ। জনতাকে অভিনন্দ জানিয়েছেন সব বক্তারাই। আর বলেছেন, অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার একমাত্র উপায় আন্দোলন।
বৃহস্পতিবার মালদহ শহরে ফোয়ারা মোড়ে সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের মালদহ জেলা কমিটির ডাকে এই সমাবেশ। স্লোগান ছিল, ‘দেশ বাঁচাও--শান্তি সম্প্রীতি রক্ষা কর’। ‘রেগা প্রকল্পের সার্বিক রূপায়ন কর’। ছিল আরও দাবি, যার সঙ্গে জড়িত গ্রামের প্রান্তিকতম শ্রমজীবী খেতমজুরদের জীবন-জীবিকার প্রশ্ন। প্রধান বক্তা ছিলেন গণআন্দোলনের নেতা সূর্য মিশ্র। সভাপতিত্ব করেছেন সংগঠনের জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ।
মিশ্র বলেছেন, ‘‘রাজ্য ও দেশে দু’জায়গায় এখন লুটেরাদের সরকার চলছে। কেন্দ্রের সরকার আদানি-আম্বানিদের ঢালাও সুবিধা দিয়ে চলেছে জনতাকে বঞ্চিত করে। অধিকার আদায়ের আন্দোলনই একমাত্র সহায়ক শক্তি।।’’
তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে লুট চলছে শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের হাত ধরে। সরকারি আধিকারিকদের একাংশ জড়িত। চাকরি থেকে চাল, গম এমনকি খেতমজুর সহ গরিব খেতমজুরদের রেগা প্রকল্পের ১০০ দিনের কাজ লুট করে দেদার অর্থ কামাচ্ছে তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। তার বিরুদ্ধে খেতমজুর সহ সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষকে আন্দোলনে শামিল হতে হবে।’’  
মিশ্র বলেন, ‘‘রাজ্যে বামফ্রন্ট ৩৪ বছর সরকারে ছিল। সরকার পরিবর্তনের পরও বামফ্রন্টের কোনও মন্ত্রী বা নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির দায় প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। দুর্নীতির দায়ে কাউকে জেলে পাঠানো সম্ভব হয়নি।’’ 
এদিন রথবাড়ি থেকে বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে পোস্ট মোড়ে এলে সভা শুরু হয়। 
সূর্য মিশ্র বলেন, ‘‘দিনে ৬-৭ জন কৃষক আত্মহত্যা করেন। এটা আমরা বলছি না। এটা সরকারি তথ্য। ন্যাশানাল ক্রাইম ব্যুরোর রিপোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকার বলছে যেসব পরিবার মাসে ৬ হাজার টাকার কম রোজগার করে তারা গরিব। অর্থাৎ দিনে ২০০ টাকা। এতে কি হয় গোটা পরিবারের। তার উপর খাদ্যশস্য সহ সব জিনিসের দাম বাড়ছে। কাজ নেই। ফলে আয়ও কমছে।’’ 
বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি অমিয় পাত্র, রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ, সম্পাদক নিরাপদ সরদার, জেলা সম্পাদক জমিল ফিরদৌস এবং নেতা সাধু টুডু। 
রাজ্যে ১০০ দিনের কাজে ব্যাপক দুর্নীতির কথা উল্লেখ করেন বক্তারা। ভুয়ো জব কার্ড দিয়ে ডুয়ো বিল করে কোটি কোটি টাকা আত্মস্যাৎ করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা অম্বর মিত্র বলেন মালদহের জেলা শাসককে আগাম জানান হলেও কোন ডেপুটেশন তিনি নিজে না নিয়ে অধস্তনকে দেওয়ার জন্য বলেন। আসলে এখনকার জেলা প্রশাসন যেমন শাসক দলের হয়ে পঞ্চায়েতে ভোট লুটে শাসক দলের হয়ে কাজ করেছে ঠিক রাজ্যে যেসব দুর্নীতি হচ্ছে তাতেও সহযোগিতা করছে সরকারি আধিকারিকদের একাংশ।

এদিন সমাবেশ মঞ্চে গণশক্তি ও জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের তহবিলে ১০ হাজার টাকা করে অর্থ তুলে দিলেন কর্মচারী আন্দোলনের নেতা প্রয়াত রতীশ চক্রবর্তীর স্ত্রী শিখা চক্রবর্তী। সূর্য মিশ্র ও অমিয় পাত্রের হাতে তুলে দেন অর্থ।

Comments :0

Login to leave a comment