AIDWA

দোষীদের শাস্তির দাবিতে অনড় রহড়ার নির্যাতিতা

রাজ্য জেলা

নির্যাতিতার বাসস্থানে মহিলা এবং সিআইটিইউ নেতৃবৃন্দ। ছবি - অভিজিৎ বসু।

‘‘আমি তো কোন দোষ করিনি, এ তো আমার লজ্জা নয়,  তবে আমি কেন মাথা নিচু করব?  টাকা-পয়সা দিতে চাইলেও নেব না। আমার মেয়েদের রক্ষা করতে হবে আমাকেই।’’ বৃহস্পতিবার সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রীদের কাছে পেয়ে এই কথাই বললেন রহড়ায় দলবেঁধে ধর্ষণের শিকার হওয়া নির্যাতিতা। 
রহড়া থানার অন্তর্গত একটি গ্রামের এক ফালি ফাঁকা জমিতে অ্যাজবেস্টের ছাউনি দেওয়া একটি ভাঙ্গা ঘরে মাথা গুঁজে কোনো মতে বসবাস। তৃণমূল দুষ্কৃতীদের অত্যাচার দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা এখন নির্জনতার কালো অন্ধকার গ্রাস করেছে তাঁর জীবন সংগ্রামকে। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে লোকের বাড়িতে গৃহসহায়িকা কাজ করে দিন গুজরান হচ্ছিল। এভাবেই তিন মেয়েকে বড় করেছেন। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। সঙ্গে থাকে দুই মেয়ে। এর মধ্যে ছোটো মেয়ের বয়স ১২ বছর। দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়ে প্রতিনিয়ত বলে যেতো দুই মেয়েকে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। রাজি না হওয়াতে সোমবার রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে পার্শ্বস্থ আমবাগান মাঠে দলবেঁধে ধর্ষণ করে ৪ দুষ্কৃতী। একটু তফাতে দাঁড়িয়ে ছিলো দুষ্কৃতী দলের আরও ২ ব্যক্তি। ৪ জনের পরে তারা এগিয়ে আসার সময়ে কোনক্রমে পালিয়ে বাঁচেন তিনি। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দিয়েছিলো দুষ্কৃতীরা রিভলবার দেখিয়ে। ভয় কাটিয়ে মেয়েদের নিয়ে থানাতে গিয়ে সোমবার রাতেই রহড়া থানাতে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ধর্ষিতা গৃহপরিচারিকা।
পুলিশের তত্ত্বাবধানে পরদিন তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা কমিটির তরফ থেকে নির্যাতিতা মহিলাকে বলা হয়েছে, সব রকমের আইনি সহায়তা করা হবে সংগঠনের তরফ থেকে। ছিলেন সিআইটিইউ নেত্রী গার্গী চ্যাটার্জি, মহিলা নেত্রী  আত্রেয়ী গুহ , সোমা চক্রবর্তী দাশ , রুনু ব্যানার্জি, যশোধারা বাগচী, পাপড়ি দত্ত, পূরবী সরকার, ইন্দ্রাণী কুন্ডু মুখার্জি এবং সজল গুহ সহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। আত্রেয়ী গুহ বলেন , নির্যাতিতা মহিলার প্রতিবাদের সাহস ও দৃঢ়তাকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন প্রতিনিধি দলের সকলেই।
নির্যাতিতার সাথে কথা বলার পরে এদিন ঘটনাস্থল থেকে একটি প্রতিবাদী মিছিল সংগঠিত করে রহড়া থানায় গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ৪ দুষ্কৃতীসহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়। পুলিশ টহল বৃদ্ধি, রাস্তায় আলো লাগানোর ব্যবস্থা, মদ জুয়ার সহ অসামাজিক কাজের আড্ডা বন্ধ করার দাবি এবং এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার দাবি করা হয় স্মারকলিপিতে।

Comments :0

Login to leave a comment