শ্রমিক কর্মচারীদের স্বার্থবিরোধী মোদী-দিদি দুই সরকারের অশুভ নীতির বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামকে আরো শক্তিশালী করার আহ্বান জানানো হলো শ্রমিক কর্মচারীদের গণ অবস্থান কর্মসূচি থেকে। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী, শ্রমিক কর্মচারী বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে ৭৭তম স্বাধীনতার প্রাক্ দিবসে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশন সমূহ, ১২ই জুলাই কমিটি ও পেনশনার সংগঠনের যৌথ আহ্বানে শ্রমিক কর্মচারীদের গণঅবস্থান কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার শিলিগুড়ি সফদর হাসমি চকে দুপুর ২টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত টানা আট ঘন্টা চলা অবস্থান কর্মসূচী থেকে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, সংবিধান বাঁচানোর স্লোগান ধ্বনিত হয়েছে। একই সঙ্গে অবস্থান মঞ্চ থেকে শ্রমিক বিরোধী নয়া শ্রম কোড প্রত্যাহার সহ শ্রমিক শ্রেনীর অধিকার রক্ষা করার আওয়াজ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে।
কেন্দ্রের মোদী সরকারের শ্রম বিরোধী নীতি ও কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এদিনের কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিআইটিইউ দার্জিলিঙ জেলা সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে আজও শ্রমজীবী মানুষ নানা সমস্যায় জর্জরিত। জাত, ধর্ম, ভাষার নামে বজ্জাতি চলছে। মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। ন্যূনতম মজুরির দাবিতে রাস্তায় শ্রমজীবী মানুষ। দুই সরকার তাদের নিয়ন্ত্রনাধীন শ্রমিক কর্মচারীদের গুরুত্বপূর্ন অধিকারগুলির ওপর পরিকল্পিতভাবে সরাসরি আক্রমণ নামিয়ে এনেছে। সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকাও আক্রান্ত। এই সময়কালে দেশের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষতা ও গোটা শ্রমিক শ্রেনীর ওপর আক্রমণ নামিয়ে এনেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। বর্তমান সময়ে মনিপুর জ্বলছে। হরিয়ানাতে জাতি দাঙ্গা চলছে। কেন্দ্রের সরকার সর্বত্রই সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ করার রাজনীতি করছে। মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টিকারী নীতি গ্রহণ করছে। দেশের গণতন্ত্র প্রতি পদে বিপন্ন হয়ে পড়ছে। সংবিধান সঙ্কটাপন্ন। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক শ্রেণির অধিকারও সরকার নানাভাবে কেড়ে নেবার চেষ্টা চালাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন শ্রমিকবিরোধী জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে আগামীদিনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, সরকার যদি নীতির পরিবর্তন না করে তাহলে আরো বড় ধরনের লড়াইয়ের পথে আমাদের যেতে হবে। আগামীদিনে সেভাবেই আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।
কেন্দ্রের বিজেপি ও রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত দুই সরকারের শ্রমিক, কৃষক ও সাধারণ মানুষের স্বার্থবিরোধী অবস্থানের কথা তুলে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এআইসিসিটিইউ’র অভিজিৎ মজুমদার, ১২ই জুলাই কমিটির পক্ষে পার্থ ভৌমিক, আইএনটিইউসি’র দিলীপ দাস, শ্যামসুন্দর দাস, ইউটিইউসি’র বিকাশ সেন রায়, এআইটিইউসি’র জয় লোধ, কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারীদের পক্ষে নন্দা সেন, পেনশনার্স যৌথ মঞ্চের পক্ষে বিপুলেন্দু চক্রবর্তী, ১২ই জুলাই কমিটির পক্ষে রজত রায়, সিআইটিইউ দিবস চৌবে প্রমুখ। বর্তমান দেশ ও রাজ্যের পরিস্থিতি বিষদে আলোচনা করে নেতৃবৃন্দ বলেন, লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ক্ষেত্রগুলিকে জলের দরে কর্পোরেট সংস্থাগুলির কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্র ও রাজ্য এই দুই সরকারের সময়কালে নানা কায়দায় সাধারনের জীবনজীবিকা সহ নানা ক্ষেত্রে আক্রমণ ক্রমশই বাড়ছে। গোটা দেশ জুড়ে সব ক্ষেত্রেই শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার খর্ব করার যে জনবিরোধী নীতি গ্রহণ করে চলেছে দুই সরকার, অবিলম্বে সেই নীতির পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংস করার ও দেশ বিক্রির নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে সুদৃঢ় আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
Comments :0