ইমরান খানকে গ্রেপ্তারির কারণ জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল ইসলামবাদ হাইকোর্ট। তার কিছু পরই ইসলামাবাদের পুলিশ জানালো অল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক মামলা দায়ের হয়ে রয়েছে। ইসলামাবাদ পুলিশের আইজি আকবর নাসির খানের নামে প্রচারিত বার্তায় বলা হয়েছে, অল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ইমরান খান এবং তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির সঙ্গে আরও কয়েকজন প্রভাবশালী এই ট্রাস্টের নামে বিশ্ববিদ্যালয় খোলেন পাঞ্জাব প্রদেশের ঝিলম জেলায়। জমি ব্যবহারে অস্বচ্ছতার অভিযোগ রয়েছে। এক জমি হাঙরকে অবৈধ সুবিধা পাইয়ে কোষাগারের ১৯ কোটি টাকা লোকসান করানোর অভিযোগও রয়েছে।
আরেকটি অভিযোগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম। বলা হয়েছে, ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির পাঠানো ৫ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন ইমরান এবং তাঁর মন্ত্রীরা।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ টুইট বিবৃতিতে বলেছেন, বারবার আদালতের সমন অগ্রাহ্য করে চলছিলেন ইমরান খান। জাতীয় কোষাগারের লোকসান করানোর অভিযোগ রয়েছে।
ইমরান খানের দল পিটিআই প্রশ্ন তুলেছে যে মঙ্গলবার আদালতেই তো হাজিরা দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তা’হলে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করার কারণ কী?
সানাউল্লাহের দাবি, গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি বিরোধী তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবলিটি ব্যুরো বা এনএবি। ১ মে এনএবি’র চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাজির আহমেদ বাট গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় সই করেছিলেন।
পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, ইমরানকে গ্রেপ্তারির দায় সরাসরি নিতে চাইছে না সরকার। ইমরানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বহু অভিযোগ থাকলেও গ্রেপ্তারির পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভের আশঙ্কা রয়েছে। ইমরান খানের সমর্থকরা বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভে নেমে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে নেমেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তারির পর ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক ব্যাখ্যা তলব করেন। ইসলামাবাদের পুলিশ প্রধান, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলকে নোটিস পাঠান তিনি। নির্দেশ না মানা হলে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকেও তলব করার হুঁশিয়ারি দেন। তার কিছু পরে প্রশাসনিক এই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ইমরান খান পাকিস্তান সেনার এক বরিষ্ঠ আধিকারিকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। পিটিআই বা তেহরিক-ই-ইন্সাফ প্রধানের দাবি তাঁকে হত্যার জন্য ওয়াজিরাবাদে হামলা হয়েছিল। সেনা যদিও এই অভিযোগগ অস্বীকার করেছে।
ইমরান খানকে পাক সেনার আস্থাভাজন বলেই মনে করতেন পাকিস্তানের পর্যবেক্ষকদের বড় অংশ। এমনকি নির্বাচনে জয় এবং প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার পিছনে সেনার মদতের আলোচনা পাক রাজনীতিতে বারবার এসেছে। তবে সেনার সঙ্গে ইমরান খানের সম্পর্কের অবনতির কারণ অস্পষ্ট।
Comments :0