দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিচয় নির্দিষ্ট করতে ডিএনএ টেস্ট শুরু হলো ভুবনেশ্বরের হাসপাতালে। ভভুবনেশ্বরে এইমস-এ মঙ্গলবারও অন্তত নিহত একশো যাত্রীর দেহ রয়েছে অশনাক্ত অবস্থায়।
দুপুর একটা পর্যন্ত পরিজনদের ১০ জনের রক্তের নমুনা নিয়েছে এইমস। ওডিশা প্রশাসন জানিয়েছে, এখন পরিচয়বিহনী দেহ রাখা হবে পাঁচটি কন্টেনারে। দীর্ঘসময় দেহ সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা থাকবে।
গত শুক্রবার বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনে তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে মৃত এবং নিখোঁজের সংখ্যা নিয়েই বিতর্ক রয়েছে। রেল প্রথমে বলেছিল নিহতের সংখ্যা অন্তত ২৮৮। বেসরকারি সূত্র থেকে শোনা যায় তিনশোর বেশি যাত্রী নিহত হয়েছেন। পরে রেল আবার মৃতের সংখ্যা কমিয়ে বলে ২৭৮।
দুর্ঘটনার জায়গায় সোমবারও দু’টি কামরা নয়ানজুলিতে পড়ে ছিল। জায়গাটি ঘিরে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করে কেন্দ্র। তার আগেই রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঘোষণা করে দিয়েছিলেন উদ্ধারের কাজ শেষ। কিন্তু পড়ে থাকা কামরায় নিহতদের দেহ রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। আধা সামরিক বাহিনীকেও দেখা যায় রুমালে মুখ ঢেকে পাহারা দিতে।
রেল এবং ওডিশা প্রশাসন জানিয়েছে নিহত যাত্রীদের ২৭৮ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে পরিচয় জানা গিয়েছে ১৭৭ জনের। বাকি ১০১ জনের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে সোমবার ছবি প্রকাশ করে রেল। দুর্ঘটনার অভিঘাতে অনেক দেহ চিনতে পারছেন না পরিজনরা।
এইমস ভুবনেশ্বরে এসেছে ১২৩ জনের দেহ। তার মধ্যে ৬৪ জনের পরিচয় জানা গিয়েছে। আবার পরিজনের দেহ অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগও মিলছে এইমস চত্বরে। এই হাসপাতালে ডেপুটি সুপার প্রভাস ত্রিপাঠি বলেছেন যে ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার ফল মিলতে ৭-১০ দিন লাগে।
এর মধ্যেই আলাদা করে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই, কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি এবং বালেশ্বরের রেল পুলিশ। সিবিআই’কে রেলওয়ে বোর্ড তদন্তের ভার দিয়েছে ‘অপরাধ মূলক চক্রান্তে’-র ইঙ্গিত দিয়ে। সেই মর্মে দায়ের হয়েছে অভিযোগ। যার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই।
বিভিন্ন অংশই ‘নাশকতা’ এবং ‘অপরাধ’ খুঁজতে নামায় প্রশ্ন তুলেছে। অত্যন্ত জটিল প্রযুক্তিসম্পন্ন সিগন্যালিং ব্যবস্থার ত্রুটি ধরতে দক্ষ রেলের নিজস্ব সেফটি কমিশনার। রেলের রক্ষণাবেক্ষণ এবং যাত্রী সুরক্ষার সমস্যার একাধিক চিহ্নিত করে গত বছরই বিশদ রিপোর্ট দিয়েছিল কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল, সিএজি।
এরমধ্যে খুরদার ডিভিশনাল ম্যানেজার রিঙ্কেশ রায় সিগন্যালিং সরঞ্জাম বাইরে থেকে নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেছেন, বাহানাগা বাজার স্টেশন দিয়ে চলার সময় করমন্ডল এক্সপ্রেসের সিগন্যাল সবুজ ছিল মেইন লাইনে। লাইন ফাঁকা না থাকলে সবুজ থাকত না। তা না হলে বাইরে থেকে কেউ বিকৃত করেছে সরঞ্জাম। ঘটনা হলো, রবিবারই সকালে তদন্ত শেষ হয়েছে বলে ঘোষণা করেছিলেন রেল মন্ত্রী। দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রেল বোর্ডের ট্রেন চলাচলের ভারপ্রাপ্ত সদস্য জয়া ভার্মা সিনহা। তখন তাঁরা কেউ ‘অপরাধ মূলক ষড়যন্ত্রের’ ইঙ্গিত দেননি।
Comments :0