Brinda Karat

ন্যায়ের জন্যই জনকল্যাণ প্রকল্প জরুরি, সেই বিচারপতিকে লিখলেন বৃন্দা কারাত

জাতীয়

পীড়িত মহিলাদের মাঝে বৃন্দা কারাত। ছবি সংগ্রহ থেকে।

গড়ে দিনে ৭ ঘন্টার বেশি সময় কাজ করেন মহিলারা, সে কাজের মজুরি পান না। এই নয় যে ভাতা পান বলে মহিলারা কাজ করেন না।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভাইকে দেওয়া খোলা চিঠিতে এমনই বললেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত।
রেশন বা ভাতা পান বলে কাজ করার আগ্রহ কমে যাচ্ছে। এই মর্মে একটি শুনানিতে বিচারপতি গাভাই মন্তব্য করেছেন বলে প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে পুনর্বিবেচনার আরজি জানিয়েছেন কারাত। দিয়েছেন একাধিক তথ্য। 
কারাত চিঠিতে লিখেছেন, ২০২৩-২৪ অর্তবর্ষে স্টেট ব্যাঙ্কের সমীক্ষায় বলা হয়েছিল মহিলারা বিনা পারিশ্রমিকে যে কাজ করেন টাকার অঙ্কে তার মূল্য ২২ লক্ষ কোটি টাকা, দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৭ ভাগ।  
বিচারপতিকে কারাত লিখেছেন, ভারতের শ্রমজীবীদের কঠিন লড়াইকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না এমন বক্তব্য। 
উল্লেখ্য, বিচারপতি গাভাই বলেছিলেন যে বিনামূল্যে রেশন পাওয়ার জন্যও মানুষ আর কাজ করে রোজগার করতে চাইছেন না। এই ধারণাকেও আঘাত করেছেন কারাত।
তিনি লিখেছেন, বিনামূল্যে রেশনের মাধ্যমে একজন মাসে ৫ কেজি পর্যন্ত শস্য পেতে পারেন। রেশনে এই প্রকল্পে কেবল শস্যই দেওয়া হয়। যেখানে মাসে অন্তত ৯ কেজি শস্যের ব্যবহার মাথাপিছু গড়। বাস্তবে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির হার সর্বকালের নজির গড়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অপুষ্ট মানুষ ভারতেই। 
বিচারপতি নিজেকে কৃষক পরিবারের সন্তান জানিয়ে বলেছিলেন যে মনরেগার জন্য কৃষকরা খেতমজুর পাচ্ছেন না। কারাত লিখেছেন, এই প্রকল্পে কাজে পরিশ্রম সাধারণ কৃষি শ্রমিকের কাজের চেয়েও বেশি। মনরেগায় দিনে ২০০ কেজি মাটি তুলে গর্ত খুঁড়তেও হয়। আসলে বিনামূল্যে রেশন বা ‘খয়রাতি’ মিলছে বলে মানুষ কাজে যাচ্ছেন না এমন মোটেই নয়। আসল বিষয় হলো কৃষিতে মজুরি হয় কমে গিয়েছে নয়তো এক জায়গায় স্থির হয়ে রয়েছে। শেষ অর্থনৈতিক সমীক্ষাতেও গ্রামীণ মজুরির এই স্থিতাবস্থাকে দেখিয়েছে। 
কারাত লিখেছেন, সরকারি জনকল্যাণের প্রকল্প সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়ের জন্যই তা প্রয়োজন। কারণ ভারত এখন বিশ্বে সবচেয়ে বৈষম্যের দেশ হিসেবে চিহ্নিত সারা বিশ্বে।

Comments :0

Login to leave a comment