সোনারপুরে সমবায় সমিতিতে দুর্নীতি এবং অর্থ তছরুপের অভিযোগে পথ অবরোধ, বিক্ষোভ দেখালেন আমানতকারীরা। অর্থ তছরূপকারীদের গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। এই আর্থিক কেলেঙ্কারির সিবিআই, ইডি’র তদন্ত দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। শনিবার সোনারপুরের গোবিন্দপুর বাইপাসে স্থানীয় বাসিন্দাদের পথ অবরোধ, বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের বচসা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এদিন সকাল প্রায় ১১ টা নাগাদ পথ অবরোধ শুরু হয়।অবরোধ তুলতে গেলে সোনারপুর থানার পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। প্রায় আধ ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকে ব্যস্ত বাইপাস।
বিক্ষোভকারী গ্রাহকদের অভিযোগ, সোনারপুরের লাঙলবেড়িয়া কৃষি সমবায় সমিতিতে প্রায় ১০ কোটি টাকা আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। প্রায় ৬ মাস ধরে গ্রাহকরা টাকা পাচ্ছেন না। এমনকি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকাও মিলছে না। চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। ফেব্রুয়ারি মাসে এই লাঙলবেড়িয়া কৃষি সমবায় সমিতির আর্থিক দুর্নীতি সম্পর্কে প্রশাসনের সর্বস্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে তাঁরা জানান। তাঁদের কথায়, কষ্টার্জিত জমা রাখা টাকা ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না। সমবায় দপ্তর, সোনারপুর ব্লকের বিডিও, থানার আইসি, বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপারকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রশাসনের তরফে তছরূপকারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে তাঁরা অবরোধ, বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন বলে জানান।
তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান অজয় দে সরকার, কোষাধ্যক্ষ অশোক ঘোষ ও স্পেশাল অফিসার সৌগত চক্রবর্তী এই বিপুল পরিমাণ আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। এদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমানতকারীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করতে হবে। বাড়ির পরিচারিকা থেকে গরিব সাধারণ মানুষ এই সমবায় সমিতিতে টাকা রেখে প্রয়োজনের সময় টাকা ফেরত না পাওয়ায় চোখের জল ফেলছেন তাঁরা। এদিন অবরোধ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন গ্রামের গরিব মহিলারা। এমনকি এই সমবায় সমিতি থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকাও মহিলারা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। এদিকে লাঙলবেড়িয়া কৃষি সমবায় সমিতির আর্থিক দুর্নীতি, তছরূপের ঘটনায় বাইপাসে গ্রাহকদের পথ অবরোধ, বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে সোনারপুরে।
অপরদিকে সমবায় সমিতির তদানীন্তন চেয়ারম্যান অজয় দে সরকার বলেন, দুর্নীতির পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি টাকা হবে। তাঁর অভিযোগ, তিনি চেয়ারম্যান থাকলেও তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করেই সমবায় সমিতির কোষাধ্যক্ষ অশোক ঘোষ ও স্পেশাল অফিসার সৌগত চক্রবর্তী জায়গা, গাড়ি কিনেছে। তাঁকে এড়িয়ে সব করা হয়েছে। কোষাধ্যক্ষ অশোক প্রায় ৭৮ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। সমবায় দপ্তরকে সব জানানো হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।
Comments :0