অবশেষে পরিচয় মিলেছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যাত্রী মৃত দমদমের বাসিন্দা বিশ্বপ্রতাপ মিশ্র(৩৬)’র। গত সোমবারের কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে দুই দিন অশনাক্ত অবস্থায় দেহ পড়ে থাকার পরে বুধবার বিশ্বপ্রতাপ মিশ্রের দেহ শনাক্ত করেন তার নিকট আত্মীয়। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে চেপে দক্ষিণ দমদমের বাসিন্দা বিশ্বপ্রতাপ মিশ্রের আর বাড়ি ফেরা হলো না। ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর। দেড় মাস পরে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি।
জানা গেছে, বিহারের বাসিন্দা হলেও, মা, স্ত্রী ও ১২বছরের ছেলেকে নিয়ে দক্ষিণ দমদম পৌরসভার ৩৩নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণদাড়ি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে থাকতেন বিশ্বপ্রতাপ। তাঁর বাবা এখনও বিহারেই থাকেন। একটি নির্মান সংস্থায় কর্মরত ছিলেন তিনি। কর্মসূত্রেই দেড় মাস আগে গুয়াহাটিতে গিয়েছিলেন। সোমবার বাড়িতে ফেরার কথা ছিলো। বুধবার দমদমের বাড়িতে মৃত্যু সংবাদ পৌঁছাতেই গোটা পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। সোমবার সকাল সকাল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার খবর জানতে পেরেই পরিবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করে। কিন্তু ফোনে কোনভাবেই ধরা যায়নি বিশ্বপ্রতাপকে। এরপরেই তন্ন তন্ন করে খোঁজ শুরু হয়। দুর্ঘটনাস্থলে দুর্ঘটনাগ্রস্ত কামড়াগুলিকে ফেলে রেখে শিয়ালদহে ফিরে যাওয়া কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের বাকি কামড়াগুলিতেও খোঁজ চলে।
শেষমেষ কোন খোঁজ না পেয়ে বিশ্বপ্রতাপের ভাই অমিত তাদের নিকট আত্মীয় বিকাশ কুমারকে সাথে নিয়ে দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে মঙ্গলবার পৌঁছেই রেলের আধিকারিকদের সাথে যোগাযোগ করেন তারা। বিশ্বপ্রতাপের ছবি দেখান। বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ শুরু হয়। কিন্তু দুর্ঘটনায় আহতদের তালিকায় বিশ্বপ্রতাপের নাম মেলেনি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখমদের মধ্যেও খোঁজ করা হয়। কিন্তু কোন খোঁজ না মেলায় বুধবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেন তারা। অশনাক্ত অবস্থায় হাসপাতালের মর্গে পড়ে থাকা ওই একটি দেহ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের ডেকে দেখান। বিশ্বপ্রতাপের সন্ধান মেলে। দেহটি দাদা বিশ্বপ্রতাপের বলে শনাক্ত করেন তারা। কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।
অজ্ঞাত পরিচয় মৃতদেহটি শনাক্ত করা গেছে। ময়নাতদন্তের পরে দেহটি আত্মীয়দের হাতে তুলে দিয়ে বাড়ির দিকে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তার দেহ আসে দমদমের দিক্ষণদাঁড়িতে। মৃত বিশ্ব প্রতাপের স্ত্রী, ১০ বছরের পুত্র,বাবা, মা ভাইরা আছেন পরিবারে। এদিন মৃত বিশ্বপ্রতিকের পরিবার কে সমবেদনা জানাতে যান সিপিআই(এম) নেতা রামধারি সাউ, গোপাল সাউ ও সন্তোষ সাউ। এখনও দুর্ঘটনার কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা। রেলের অব্যবস্থার বিরুদ্ধে এলাকার সাধারণ মানুষের ক্ষুব্ধ।
Kanchanjunga Express Accident
ট্রেন দুর্ঘটনায় শনাক্ত দমদমের বিশ্বপ্রতাপ
×
Comments :0