নতুনপাতা
জানা অজানা
স্বশিক্ষিত শিল্পী
তপন কুমার বৈরাগ্য
বাংলার শিল্পকলা চর্চার ইতিহাসে ঠাকুরবাড়ির নাম জানেন না
এমন কোনো ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই বাড়ির বিচিত্রা স্টুডিয়ো,
দক্ষিণের বারান্দার চিত্রচর্চা সারা ভারতবর্ষকে নতুন পথ দেখিয়েছে।
এই বাড়ির গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর,অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
অনন্য প্রতিভা সারা বিশ্বে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এদের
চিত্রচর্চা ছিল নিজস্ব স্বকীয়তায় উজ্জ্বল। কিন্তু এই বাড়ির মেয়ে
সুনয়নী দেবীর নাম আমরা অনেকেই জানিনা। যিনি ছিলেন
গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা এবং গগনেন্দ্র নাথ ঠাকুর ও অবনীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের আদরের বোন। এই শিল্পচর্চার আবহে ছোট্ট বোনটা দেখতেন
দাদাদের আঁকা বিভিন্ন ছবিগুলো।দাদা গগণেন্দ্রনাথ আঁকছেন
সাঁওতালদের নিয়ে ছবি, তিনি একমনে তাহা দেখছেন।
দাদা অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর আঁকছেন পদ্মাবতী,অভিসারিকা,বুদ্ধ ও সুজাতা,
সুনয়নী দেবী হাসিমুখে তাহা পর্যবেক্ষন করছেন। দেখতে দেখতে
শিল্পচর্চার আবহে তিনিও যেন কখন স্বশিক্ষিত শিল্পী হয়ে উঠলেন।
স্বাদেশিয়ানা ও স্বাজাত্যভিমানের দিকে লক্ষ্য রেখে রামায়ণ-মহাভারতের
এবং বৈষ্ণবপদাবলীর রাম,সীতা,কৃষ্ণ,রাধার চরিত্রগুলো নিজের
অনুপ্রেরণায় জীবন্ত করে তোলেন।যশোদা,বাউল ,চিত্রগুলো
তার জল রঙে জীবন্ত হয়ে উঠল। দাদারা বুঝতে পারেননি তাঁদের ছোট্ট
বোন তাদের অজান্তেই কতো সুন্দর সুন্দর ছবি এঁকে ফেলেছেন।
যখন জানতে পারলেন তখন তারা বিস্ময়ে অবিভূত হয়ে গেলেন।
তাঁরা ভেবে পেলেন না তাঁদের আদরের বোনটা নিজের প্রতিভা নিজেই
বিকশিত করেছেন।
Comments :0