HINDIBHASHI SAMAJ HOOGLY

ভাষা, ধর্মের বানানো বিবাদ রোখার ডাক হিন্দিভাষী সম্মেলনে

জেলা

চন্দননগর ধারপাড়া বিপ্লবী কালীচরণ ঘোষ স্মৃতি ভবনে সম্মেলনের প্রতিনিধিরা।

শুভ্রজ্যোতি মজুমদার, চন্দননগর

দেশে বেড়ে চলছে সাম্প্রদায়িকতা। ভারতীয় সংস্কৃতি ও হিন্দিভাষী জনতার সম্প্রীতির সংস্কৃতির ওপর আঘাত নামছে। তার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ হিন্দিভাষী সমাজের হুগলী জেলা প্রথম সম্মেলন হলো চন্দননগর ধারপাড়া বিপ্লবী কালীচরণ ঘোষ স্মৃতি ভবনে। 
উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি হেমন্ত প্রভাকর। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনও একটি মাত্র ভাষার পক্ষে নই। ভারতের সংবিধানে ১৮টি ভাষা স্বীকৃত। কোন একটি ভাষাকে অতিরিক্ত জোর দেওয়া হয়নি ভারতীয় সংবিধানে।’’ তিনি মনে করিয়েছেন গণতন্ত্র আক্রান্ত হলে সব ভাষাভাষী মেহনতী মানুষই বিপন্ন হন। ভাষা বা ধর্ম আলাদা হলেও সঙ্কট অভিন্ন।
‘চমন কো সিঁচনে নে মে কুছ পত্তিয়া ঝড় গয়ি হোগি, য়হি ইল্জাম লগ রাহা হ্যায় হম পর বেবফাই কা, চমন কো রৌন্ধ ডালা জিনহোনে অপনে পৈরো সে, ব’হি দাবা কর রহে হে ইস চমন কি রহনুমাই কা’। 
মোরাদাবাদের বিখ্যাত শায়র মনসুর ওসমানীর এই উর্দু শায়রির বাংলা তর্জমা হলো, দেশকে তৈরি করতে গিয়ে কিছু পাতা হয়ত ঝড়ে গেছে কিন্তু এখন সেখানেই অভিযোগ হচ্ছে রাষ্ট্রদ্রোহের। যারা দেশকে পায়ে ডলে দিল, তারাই দেশের রক্ষাকর্তা হিসেবে নিজেকে দাবি করছে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে এই শায়রি বলেছেন প্রভাকর। তিনি বলেন, ‘‘যাদের, তারা ‘মর্যাদা পুরুষোত্তম’ রাম-কে সামনে এনে ভোট চাইতে আসছে।’’ বাংলা এবং হিন্দির বিরোধ নেই। সেকথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের আক্রমণ হলে হিন্দিভাষী বা কোনও ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ কেউ বাঁচবেন না। বুদ্ধি বিদ্যা বা সংস্কৃতির বিচার জাত বা ধর্ম দিয়ে হয় না। এই ধরিত্রির আসল মানসপুত্ররা মাথার ঘাম পায়ে ফেলা ফসল ফলানো কৃষক, নিজের হাড় গলিয়ে রাষ্ট্র গড়া শ্রমিক। কিছু চোর জোচ্চোর নেতা নয়।’’ রাজ্য যুগ্ম সম্পাদক শ্রেয়া জয়শোয়াল সহ রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর অন্যান্য সদস্যরা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। প্রতিবেদন পেশ করেন জেলা আহ্বায়ক গোপাল শুক্লা। 
১২ থেকে ১৪ জন প্রতিনিধি প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা করেন। সম্মেলন থেকে যথাক্রমে থেকে গোপাল শুক্লা কে জেলা সম্পাদক কে জুলফিকার আলি কে জেলা সভাপতি কে রাজেন্দ্র কুমার সাউ কে জেলা কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত করে জনের ১৫ জনের জেলা সম্পাদকমন্ডলী ও ৫৫ জনের জেলা কমিটি গঠিত হয়। রাজেন্দ্র কুমার সাউ, অঞ্জু ভগৎ, মহম্মদ ইসমাইল, মহম্মদ হাসিম, জনা দাশগুপ্ত কে নিয়ে গঠিত ১২ জনের সভাপতিমন্ডলী সন্মেলন পরিচালনা করেন।
সম্মেলন থেকে শকুন্তলা তিওয়ারীর নামে চন্দননগর শহরের ও প্রখাত শায়র শওকত আজিমের নামে মঞ্চের নামকরণ করা হয়।

Comments :0

Login to leave a comment