দত্তপুকুর মোচপোলের সামসুল আলির কারখানায় বিস্ফোরণ রবিবার প্রথম নয়। মাসখানেক আগে সামসুলের বাঁশ বাগানের ভেতর বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মুর্শিদাবাদের এক শ্রমিকের হাত আর মুখ ঝলসে গিয়েছিল। এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা বাজি কারখানার বিরুদ্ধে সরব হলেও তাদের হুমকি দিয়ে চুপ করিয়ে রাখা হয়েছিল। পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। কয়েকদিন ধীরে চলো নীতি নিলেও আবার রমরমিয়ে চলতে থাকে সামসুলের বাজি কারখানা। সামসুলের বাড়িতেই ছিল বিস্ফোরণের গোডাউন। মুর্শিদাবাদের সুতি থেকে লোকজন এসে এই কারখানায় কাজ করতেন। স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন, মাস খানেক আগের ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়নি সামসুল। তারপরও সামসুল বাড়িতে বিস্ফোরণ জমা করতো। তারই খেসারত দিতে হলো রবিবার ৯ জন মানুষের প্রাণের বিনিময়ে। সামসুল ও নিহত হয়েছেন ওই দিনের ঘটনায়।
বিস্ফোরণের দু’দিন পরেও থমথমে মোচপুল। পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে। কোন মানুষকে ঘটনাস্থলের আশ পাশে যেতে দিচ্ছে না। এরইমধ্যে এনআইএ তদন্ত চলছে। এদিন ঘটনাস্থল দেখতে আসা উৎসাহিত মানুষজনের সংখ্যাও কম। গত দুদিনের তুলনায় কিছুটা স্বাভাবিক। দোকানপাঠ খুলেছে। আর কোন মৃতদেহ এদিন উদ্ধার হয়নি। বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যুর খবর মিললেও স্থানীয় মানুষজনের আশঙ্কা পুলিশ মৃতদেহ রাতের অন্ধকারে লোপাট করেছে। অন্যদিকে বারাসত হাসপাতালের মর্গ থেকে মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের সুতির নিহত বাসিন্দা রনি শেখ, জেরাত শেখ, কলেজ শেয, আন্দাজ শেখ ও মাসুম শেখের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর তাদের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে বিস্ফোরণের ঘটনায় গুরুতর জখম ৪ জনের শারীরিক অবস্থা স্থীতিশীল। এদের মধ্যে একটি দেড় বছরের শিশুও রয়েছে।
রবিবার সকাল ১০ টা নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে শিশু ও মহিলারা। রবিবার সকাল ১০ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ইছাপুর নিলগঞ্জ পঞ্চায়েতের মোছপুল এলাকার পশ্চিম পাড়ায় ঘনবসতি এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ তৃণমূল ও প্রশাসনের মদতেই এই বাজি কারখানা চলছিল। তাদের দাবি, বারবার পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। আপত্তি জানালে বাসিন্দাদেরই পালটা হুমকির মুখে পড়তে হতো। বাজি কারখানার আড়ালে বোমা তৈরি হতো এমনটাই অভিযোগ স্থানীয় মানুষের।
Comments :0