HAM RADIO

হারিয়ে যাওয়া তিন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে একদিনে মেলালো হ্যাম

রাজ্য

HAM RADIO নেপালের সেই বৃদ্ধের পুণর্মিলন পরিবারের সঙ্গে।

কোন্নগর-দক্ষিণ ভারত-নেপাল। হ্যাম রেডিওর সংযোগ একদিনে তিন তল্লাটের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে পরিবারের সঙ্গে মিলিয়ে দিল।

শ্রীরামপুর ওয়ালস হসপিটাল এর সহকারী সুপার বাসুদেব জোয়ারদার ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবকে জানান যে সত্তরোর্ধ্ব এক ব্যক্তি রাস্তায় দুর্ঘটনার আহত হয়ে ওয়ালস হসপিটালে ভর্তি । এখনো তিনি গুরুতর অসুস্থ। বারবার তার পুত্র ও স্ত্রীর কাছে ফিরে যেতে চাইছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুলিশকে তিনি বিহারের একটি ঠিকানা দেন। কিন্তু সেই ঠিকানায় পুলিশ যোগাযোগ করে কাউকে পায়নি। 

এরপরই রেডিও ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরিশ নাগ বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘ কোন্নগরে তাঁর বাড়ির খোঁজ মেলে।  যদিও তাঁর আদি বাড়ি, কুড়ি বছর আগে, ছিল বিহারেই। খোঁজ করে বিহারের আরেকটি জেলায় তাঁর পরিবারের সূত্র পাই। সেই সূত্র ধরেই কোন্নগরে ছেলের সন্ধান মেলে। 

জানা গেছে, গত দোলের সময় অ্যালজাইমার রোগে আক্রান্ত ওই বৃদ্ধ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন।  ছেলে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল। বহু খোঁজাখুঁজি করেছিল কিন্তু পায়নি। নাগ বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘সেই বৃদ্ধকে পরিবারের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে পেরে খুশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, খুশি আমরাও।’’  

কলকাতার শম্ভুনাথ পন্ডিত হাসপাতালেও মিলেছে সাফল্য। গঙ্গাসাগর মেলার সময়ে কলকাতার রাস্তায় এক বৃদ্ধা দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। ময়দান থানার পুলিশ শম্ভুনাথ পন্ডিত হসপিটালে ভর্তি করায়। ভাষাজনিত সমস্যার কারণে ডাক্তার বা পুলিশ কেউ তাঁর বাড়ি কোথায় জানতে না পারছিলেন না। বিভিন্ন ভাষাভাষীর লোকদের নিয়ে বৃদ্ধার সাথে কথা বলান তাঁরা। কিন্তু, বৃদ্ধা তাঁর বাড়ির ঠিকানা দিতে পারেননি। 

নাগ বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘হাসপাতালের সুপার সুব্রত দে আমাদের বিষয়টি জানান।  এরপর  দক্ষিণ ভারতের সমস্ত হাম রেডিও সংগঠনের কাছে বৃদ্ধার ছবি পাঠানো হয়।  অবশেষে আজাদ রমেশবাবু বলে দক্ষিণ ভারতের এক হ্যাম রেডিও কর্মী বৃদ্ধার নাতির হদিস পান। তিনি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, হায়দরাবাদে চাকরি করেন। শনিবার আমাদের সদস্য সোহম চক্রবর্তী  নাতির সাথে মিলিয়ে দেন তাঁর প্রিয় ঠাকুমাকে।  আবেগে আত্মহারা বৃদ্ধা হাতই ছাড়ছিলেন না নাতির। আমরা খুব খুশি।’’ 

উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে ত্রিশ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক বৃদ্ধাকেও  কলকাতার নেপাল উপদূতাবাসের কর্মীদের কাছে দেওয়া হলো। তিনি নেপালের নাগরিক।

নাগ বিশ্বাস বলেন, ‘‘হিঙ্গলগঞ্জের ব্যবসায়ী সুশান্ত ঘোষ ওই বৃদ্ধাকে পাওয়ার পর আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন। নেপালের প্রত্যন্ত জায়গায় তাঁর বাড়ি খুঁজে বার করি আমরা। জানা যায় ত্রিশ বছর আগে কাঠমান্ডুতে চিকিৎসা করতে এসে ছেলের সঙ্গে নিখোঁজ হন বাবা। বিষয়টি জানালে হস্তক্ষেপ করেন কলকাতায় নেপালের উপদূতাবাসের কনসাল জেনারেল ঈশ্বর রাজ পাউড়েল। শনিবার তাঁকে দূতাবাসের কর্মী সতীশ থাপার কাছে দেওয়া হয়।’’

Comments :0

Login to leave a comment